ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নাব্যতা সংকটে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
নাব্যতা সংকটে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন

ভোলা: শীত মৌসুমের শুরুতেই ভোলা-লক্ষীপুর রুটে মেঘনায় ডুবোচর জেগে ওঠার কারণে লঞ্চ ও ফেরি চলাচলে মারাত্মক বিঘ্নের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা।

 

নাব্যতা সংকটের কারণে নৌযান চলাচলে দ্বিগুন সময় লাগছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে চলছে ফেরি ও লঞ্চ। এতে একদিকে যেমন গন্তব্যে পৌঁছাতে অতিরিক্ত সময় লাগছে অন্যদিকে সীমাহীন দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষদের।

সূত্র জানায়, ভোলার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের সহজ মাধ্যম ভোলা-লক্ষীপুর নৌরুট। জনগুরুপ্তপূর্ণ এ নৌ পথে তিনটি ফেরি ও ১৬টি লঞ্চ যাতায়াত করছে। দেশের দীর্ঘতম নৌপথ হিসেবে পরিচতি এ রুটের দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। ভোলা থেকে লক্ষীপুর যেতে ফেরিতে ৩ ঘণ্টা এবং লঞ্চে সোয়া ঘণ্টা সময় লাগলেও বর্তমানে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরিতে ৫ ঘণ্টা এবং লঞ্চে ২ ঘণ্টা করে সময় লাগছে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা।  

লঞ্চ ও ফেরি মাস্টারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোলা-লক্ষীপুর রুটের মেঘনা নদীর মতিরহাট, মেহেন্দিগঞ্জ, বুড়ির খাল ও রামদাসপুর পয়েন্টে ডুবোচর জেগে উঠেছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ে ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় উভয় পাড়ে দীর্ঘ জট লেগে থাকে।

ভোলা-লক্ষীপুর রুটে চলাচলকারী কলমিলতা ফেরীর মাস্টার মো. সালাউদ্দিন জানান, আগে আমাদের যেতে সময় লাগতো ৩ ঘণ্টা। কিন্তু এখন লাগছে ৫ ঘণ্টা। অনেক সময় জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এতে সবার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফেরি চলাচল করতে কমপক্ষে ৮/১০ ফুট পানির প্রয়োজন কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে মতিরহাট, বুড়ির খাল ও রামদাসপুর পয়েন্টে ৩-৪ ফুটের বেশি পানি থাকে না, তাই যাতায়াতে বিলম্ব হচ্ছে।  

ভোলা-লক্ষীপুর রুটে চলাচলকারি চন্দ্রদ্বীপ লঞ্চের মাস্টার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ডুবোচর এখন ভয়াবহ একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে লঞ্চগুলোতে ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে একদিকে অতিরিক্ত সময় লাগছে অন্যদিকে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা।

তিনি বলেন, বুড়িরখাল পয়েন্টে ৩০০ মিটার, মতিরহাট পয়েন্টে এক কিলোমিটার ও মেহেন্দিগঞ্জ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ডুবোচর জেগে উঠেছে। এ কারণে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। আগে যেখানে ভোলা থেকে লক্ষীপুর যেতে সময় লাগতো সোয়া ঘণ্টা এখন ডুবোচরের কারণে সময় লাগছে ২ ঘণ্টার বেশি। ড্রেজিং করলে এ সমস্যা থাকতো না। তাই দ্রুত ড্রেজিং করা জরুরি।
   
ভোলা ফেরি ঘাটের বিআইডব্লিটিসি ব্যবস্থাপক এমরান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ডুবো চরের কারণে ফেরি ও লঞ্চ চলতে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে ফেরিঘাটের উভয় পাড়ে জানজট লেগে থাকে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে পরিবহন শ্রমিক, ফেরি কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ যাত্রীদের। এ রুটে দ্রুত ড্রেজিং করতে আমরা বেশ কয়েকবার বিআইডব্লিটিএ কর্মকর্তাদের জানিয়েছে।
 
ভোলা বিআইডব্লিটিএ অতিরিক্ত পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ভোলা-লক্ষীপুর রুটে মেঘনা নদীতে ডুবোচর সমস্যা আছে, তবে মতিরহাট পয়েন্ট দিয়ে ড্রেজিং চলছে, খুব শিগগিরই অন্য পয়েন্ট দিয়েও ড্রেজিং শুরু হবে। তখন আর এ সমস্যা থাকত না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।