ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপে বাংলাদেশের মানচিত্র

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপে বাংলাদেশের মানচিত্র বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপে তৈরি করা হচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র, ছবি: বাংলানিউজ

জামালপুর: জামালপুরের বকশীগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণীয় করে রাখতে তাদের হাতের ছাপ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই হাতের ছাপেই তৈরি করা হচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্র।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) বকশীগঞ্জের ঐতিহাসিক ধানুয়া কামালপুর মুক্তদিবসের প্রস্তুতি সভা শেষে সারাদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ সংগ্রহ করে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

ধানুয়া কামালপুর হচ্ছে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম মুক্ত এলাকা। ১৯৭১ সালে ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম। এ সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জে। এ সেক্টরের অদূরেই ধানুয়া কামালপুর সীমান্তে ছিল পাকিস্তানি হানাদারদের কংক্রিটের তৈরি বাংকারসহ দুর্ভেদ্য ও সুরক্ষিত শক্তিশালী ঘাঁটি। যুদ্ধে পারদর্শী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চৌকচ রেজিমেন্ট ৩১ বালুচ রেজিমেন্টের সৈন্যদের পকিস্তান সরকার নিয়োগ করেছিল কামালপুর ক্যাম্পে। বাংকারের ওপরে কয়েক স্তর লগ-বালুর বস্তা-কংক্রিটে সাজানো ছিল। বাংকারগুলোতে সুড়ঙ্গ পথে যাতায়াতের ব্যবস্থা ছিল। চারদিকে পুঁকে রাখা ছিল এন্টি ট্যাংক মাইন, বুব্যি ট্র্যাপ এবং এন্টি পারসোনাল মাইন। ক্যাম্পটি ঘেরা ছিল কাঁটাতারের বেড়া ও স্পাইকস দিয়ে। ঘাঁটির চারপাশে দেড় থেকে দুইশ’ গজ এলাকার গাছ কেটে রাখা হয়েছিল।

পাকিস্তানি বাহিনীর এ রণকৌশলের যথেষ্ট কারণও ছিল। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর রাজধানী ঢাকা দখলের সহজ ও একমাত্র পথ ছিল এটি। কামালপুর দখল হলেই ঢাকা দখল সহজ হয়ে যাবে। হানাদারদের এ শক্তিশালী ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃতে ১২ জুন থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে হানাদারদের আট দফা সম্মুখ যুদ্ধ হয়।

এ যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিনসহ ১৯৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ও শত্রু পক্ষের একজন মেজরসহ ৪৯৭ জন নিহত হন। আহতও হন অনেকে। এ যুদ্ধে শত্রুর মর্টার শেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের গুরুতর আহত হন এবং একটি পা হারান।

বীর মুক্তি সেনারা ২৪ নভেম্বর থেকে কামালপুরের শত্রুক্যাম্প অবরোধ করে টানা ১০ দিন সম্মুখ যুদ্ধের পর ৪ ডিসেম্বর কামালপুরকে শত্রু মুক্ত করেন। এদিন কামালপুর ক্যাম্পের গ্যারিসন কমান্ডার আহসান মালিকসহ ১৬২ পাকিস্তানি সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসর্মপণ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণীয় করে রাখতে এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।