ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কার্যকর ওষুধ নিয়ে মাঠে উত্তর সিটি, অপেক্ষা ফলাফলের

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
কার্যকর ওষুধ নিয়ে মাঠে উত্তর সিটি, অপেক্ষা ফলাফলের ফাইল ছবি

ঢাকা: গবেষণাগারে পরীক্ষায় ভালো ফল পাওয়ায় রাজধানীতে মশক নিধনে নতুন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন ৬২৯টি হট স্পটের মধ্যে ৪৬৮টি স্পটে ‘নোভা লিউরন’ নামের এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে।

এখন ‘ফিল্ড টেস্টের’ ফলাফলের অপেক্ষা।

রাজধানীতে যেসব স্থানে মশা বেশি, সেসব স্থানকে ‘হট স্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সংস্থাটি জানিয়েছে, গত সপ্তাহের শনিবার অর্থ্যাৎ ১৭ অক্টোবর থেকে চলতি সপ্তাহের ২৫ অক্টোবর রোববার পর্যন্ত ৪৬৮টি হট স্পটে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এই ওষুধের কার্যকারিতার ফল পেতে এক থেকে দেড় সপ্তাহ সময় লাগবে। ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ এবং কীটতত্ত্ববিদরা গবেষণাগারের মতো ‘ফিল্ড টেস্টেও’ ভাল ফল আশা করছেন।

সংস্থাটির অতিরিক্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের মশক কর্মীরা যেভাবে মশার ওষুধ দিয়ে থাকে, এ ওষুধ সেভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না। আমাদের মেডিক্যাল অফিসার এবং কীটতত্ত্ববিদদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটা প্রয়োগ করা হচ্ছে। আরও প্রায় এক থেকে দেড় সপ্তাহ সময় লাগবে ওষুধের কার্যকারিতা বুঝতে। কারণ এটা একবার প্রয়োগ করলে ৯০ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে। ”

ওষুধ প্রয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে গোলাম সারওয়ার বলেন, “প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২টি করে ট্যাবলেট মেশাতে হয়। তবে লেক বা খোলা যেসব জলাধার আছে সেখানে আমরা পানির পরিমাণ অনুমান করে ওষুধ দিচ্ছি। ফলাফল দেখে এটার পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো হবে। গ্র্যানিউলাসগুলোকে নাইলন ম্যাশ কাপড়ে বেঁধে পানিতে ডোবানো অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নইলে পানির নিচে কাদায় পড়ে যেতে পারে অথবা পানিতে ভেসে যেতে পারে। প্রতিটি গ্র্যানিউলাস ১ গ্রামের। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কেজি ওষুধ আমরা প্রয়োগ করেছি। ”

ল্যাবরেটরি টেস্টের মতো ফিল্ড টেস্টেও এই ওষুধ ভালো ফল দেবে বলে আশা করছেন সিটি কর্পোরেশনের সিনিয়র কীটতত্ত্ববিদ মোহাম্মদ আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, “ডিএনসিসির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং কীটতত্ত্ববিদদের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন জায়গায় মসকিটোন (নোভালিউরন) লার্ভিসাইডের ইফিকেসি (কার্যকারিতা) পরীক্ষা করা হয়েছে। ৯০-৯৫ ভাগ কার্যকর ফল পাওয়া গেছে। গবেষণাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের ফলাফলের তুলনায় ফিল্ড লেভেলে ফলাফলের কিছু তারতম্য হতে পারে। ”

আরিফুর রহমান আরও জানান, এই ওষুধটি যুক্তরাজ্যের রাসেল আইপিএম প্রতিষ্ঠানের তৈরি এবং বাজারে এটি মসকিটোন নামে পরিচিত। আর এটার গ্রুপ নাম ‘নোভা লিউরন’।

এদিকে নতুন এই ওষুধের ব্যবহার বাড়ানো গেলে সাধারণ নাগরিক এবং সিটি কর্পোরেশন উভয়ের জন্য সাশ্রয়ী হবে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম সারওয়ার। তিনি বলেন, “মশক নিয়ন্ত্রণে একটি স্পটে আমাদের কর্মীদের ২৭বার স্প্রে করতে হয়। প্রতিবার স্প্রেস করতে কর্মী প্রতি ৫০০ টাকা করে খরচ হয় আমাদের। নতুন ওষুধের দাম বেশি হলেও তা ৩ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে। ফলে এটা সাশ্রয়ী। এটা সিটি কর্পোরেশনের ব্যয় কমাবে। এ ওষুধ যে কেউ কিনে বাসাবাড়ি ও আশপাশে প্রয়োগ করতে পারবেন। ”

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
এসএইচএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।