ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দেবীর বিদায়ের শুভক্ষণে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন রমনীরা

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
দেবীর বিদায়ের শুভক্ষণে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন রমনীরা

বগুড়া: শারদীয় দুর্গোৎসবে ধর্মীয় রীতি-নীত অনুযায়ী এখন দেবীকে বিসর্জন দেওয়ার পালা। দেশের বিভিন্ন জেলার মতো বগুড়াতেও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।

ভোর থেকেই পূজামণ্ডপগুলোতে বাজছে বিষাদের সুর। শেষ বেলায় দেবীর আরাধনায় ব্যস্ত ভক্ত সাধারণ। বিদায় মুহূর্তে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন ভক্তরা।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) বগুড়া শহরের চেলোপাড়া, মালতীনগর, জলেশ্বরীতলা, দত্ত্বপাড়িসহ বেশ কয়েকটি এলাকার পূজামণ্ডপে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ড ঘুরে দেখা যায়, ভক্তরা একে অপরের কপালে সিঁদুর পড়িয়ে দেন। গালে গালে কেটে দেন সিঁদুরের আঁচড়। পাশাপাশি বিভিন্নভাবে আনন্দ-উল্লাস করেন ভক্তরা এবং সাধারণ দর্শনার্থীরা পরিদর্শন করেন বিভিন্ন মণ্ডপ। সকাল থেকেই তারা দেবীর দর্শন পেতে ছুটছেন মণ্ডপগুলোয়। মণ্ডপে মণ্ডপে যাচ্ছেন আর মনবাসনা পূরণে মায়ের আশীর্বাদ কামনা করছেন।

সকালে নির্ধারিত সময়ে উলু ধ্বনি, ঢাকের বাদন, কাসর, ঘণ্টা ও শঙ্খ বাজানো হয়। এরপর যথানিয়মে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে শুরু হয় দুর্গাপূজা। আর বিভিন্ন ভোগ্য সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপে রাখা দেবী দুর্গার চরণে অঞ্জলি দেন ভক্ত সাধারণ।

বিজয়া দশমীতে পূজামণ্ডপগুলোতে দেবীকে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি সবার। সকাল থেকেই মণ্ডপে ভিড় করতে থাকেন ভক্ত সাধারণ ও দর্শনার্থীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কানায় কানায় ভরে যায় মণ্ডপগুলো। ভক্ত ও সাধারণ দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মণ্ডপগুলো।

প্রতিমা রায়, চন্দ্র মল্লিকা, শ্যামা রানী, রাধা রানী বর্মণসহ কয়েকজন ভক্ত বাংলানিউজকে জানান, দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিতে হবে। ধর্মীয় বিধানমতে দেবী দুর্গাকে ধরে রাখার কোনো সুযোগ নেই। তাই বিদায়ের দিন হওয়ায় সকাল সকালেই মণ্ডপে এসেছেন তারা। পূজা অর্চনা করেছেন। অতীত জীবনের পাপ মোচন ও অশুভ শক্তির কবল থেকে বাঁচতে দেবী দুর্গার কাছে আশীর্বাদ কামনা করেছেন।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ কুমার দেব জানান, প্রতিটি মণ্ডপে বিভিন্ন বয়সী নারীরা সিঁদুর খেলায় মেতে উঠছেন। প্রত্যেক দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলে থাকেন তারা। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

তিনি বলেন, গোধূলি লগ্নের মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। এ বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে কেন্দ্রীয় ভাবে তাদের ২৬টি শর্ত বা দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। মণ্ডপে মণ্ডপে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, শারীরিক দুরত্ব বজায় নিশ্চিত করা, দর্শনার্থীদের মণ্ডপে বেশি সময় অতিবাহিত না করা, আলোকসজ্জা থেকে বিরত থাকা, কোনোপ্রকার মেলা না বসানো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না করা, সাউন্ড বক্স বা গান বাজনা না করা ইত্যাদি।

তিনি আরও বলেন, জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে বগুড়া সদরে ১১৫টি, শাজাহানপুরে ৫৪টি, শিবগঞ্জে ৫৪টি, সোনাতলায় ৩৬টি, সারিয়াকান্দিতে ২০টি, ধুনটে ৩২টি, গাবতলীতে ৬০টি, শেরপুরে ৮০টি, নন্দীগ্রামে ৪৩টি, কাহালুতে ৩৮টি, আদমদীঘিতে ৬০টি এবং দুপচাঁচিয়ায় ৩৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে পূজাকে ঘিরে আনন্দের পরিমাণটা অনেকাংশেই কমে এসেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। তবুও স্বাস্থ্য সচেতন থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
কেইউএ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad