ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে উৎসবের বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২০
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে উৎসবের বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ...

নারায়ণগঞ্জ: ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করা উৎসব পরিবহনকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলছেন, উৎসব পরিবহন লিমিটেডের নামে যেসব বাস চলাচল করছে সেগুলোর অনুমোদন নেই।

আদালতের ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসব পরিবহনের সব বাস বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন আরটিসি’র উপপরিচালক ও সদস্য সচিব শফিকুজ্জামান ভূঞা।

রোববার (২৫ অক্টোবর) ওই চিঠি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, বিআরটিএ সহ ৬ দপ্তরে প্রেরণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করা উৎসব পরিবহনের চেয়ারম্যান হলেন শহীদুল্লাহ। এ বাস চালু করেছিলেন কামাল মৃধা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েক বছর ধরেই বিরোধ চলে আসছিল।

আরটিসির চিঠিতে বলা হয়, উৎসব পরিবহনের মালিক কামাল উদ্দিন মৃধা ‘উৎসব পরিবহন লিমিটেড’ (রেজি: নম্বর-সি-১৫৬৬২৪) এর নামে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বাসসমূহ বন্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নম্বর-৪২৪০/২০২০ দায়ের করা হয়।

উক্ত আদেশে দেখা যায়, উৎসব পরিবহন কর্তৃক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মৃধা বিআরটিএ বরাবর গত ৭ জানুয়ারি ‘উৎসব পরিবহন লিমিটেড’ (রেজি: নম্বর-সি-১৫৬৬২৪) এর নামে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বাসসমূহ বন্ধ সংক্রান্ত একটি আবেদন দাখিল করেন। পরবর্তী সময়ে উক্ত আবেদনের বিষয়ে আবেদনকারী কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নম্বর-৫০৫/২০২০ দায়ের করা হয়। দায়ের করা রিট পিটিশনে হাইকোর্ট বিভাগ ৬০ দিনের মধ্যে কামালউদ্দিন মৃধা এর আবেদনটি নিষ্পত্তির আদেশ দেন। যা পরবর্তী সময়ে ২ নম্বর পত্রের মাধ্যমে নিস্পত্তিপূর্বক আবেদনকারীকে অবহিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে কালাম মৃধা পুনরায় হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নম্বর-৪২৪০/২০২০ দায়ের করেন।

ঢাকা মেট্রো আরটিসি কর্তৃক এ-২৩৬ নম্বর রুটে (সায়েদাবাদ হতে নারায়ণগঞ্জ স্টপেজ: সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, লিংকরোড হয়ে নারায়ণগঞ্জ) উৎসব পরিবহন লি.  (রেজি: নম্বর-সি-১৫৬৬২৪) নামে কোনো পরিবহন কোম্পানির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কিন্তু কামাল উদ্দিন মৃধা কর্তৃক ৭ জানুয়ারির আবেদন অনুযায়ী ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে উৎসব পরিবহন লিঃ (রেজি: নম্বর-সি-১৫৬৬২৪) নামে পরিবহন পরিচালিত হলে তা অবৈধভাবে চলাচল করছে। যা ঢাকা মেট্রোপলিটন আরটিসি কর্তৃক অনুমোদিত নয়। এমতাবস্থায় হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নম্বর-৪২৪০/২০২০ মামলার আদেশ বাস্তবায়নের নিমিত্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে উৎসব পরিবহন লি. (রেজি: নম্বর-সি-১৫৬৬২৪) নামে অবৈধভাবে চলাচলকারী চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে উৎসব পরিবহনের নতুন বাস সার্ভিস চালু করা হয়। এর আগে উৎসব পরিবহনের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে উৎসব পরিবহন নাম পাল্টে উৎসব ট্রান্সপোর্ট করা হয়। এর মধ্যে মারামারির ঘটনার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে উৎসবের বাস বন্ধ করে দেয়। পরে উৎসব পরিবহনের সব বাস উৎসব ট্রান্সপোর্টের নামে চলাচল শুরু করে। এ নিয়ে উৎসব পরিবহনের চেয়ারম্যান কামাল মৃধার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসব ট্রান্সপোর্টের সব বাস গত ১৬ অক্টোবর বন্ধ করে দেওয়া হয়।

উৎসব পরিবহনের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা কামাল মৃধা বলেন, ‘২০০২ সালের জুলাইয়ে উৎসব কোম্পানিটি চালু হয়। তখনি ভাড়া দুই টাকা কমিয়ে ১০ টাকায় পরিচালনা করেছি। এর পর থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন মামলা। যখন মামলা একের পর এক হতে থাকে তখনি আমি আর সামলে উঠতে পারিনি। বাধ্য হয়ে বিদেশ চলে যাই। বিভিন্ন মামলায় ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ২০০৫ সালে আমার ভাগিনা কাজল মৃধাকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে নিউইয়র্ক চলে যাই। বিদেশে থাকা অবস্থায় সব মামলা শেষে দেশে ফিরে এসে কাজল মৃধাকে ব্যবসার হিসাব চাইলে সে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিয়ে ভয় দেখায় এবং আমার ব্যবসার আয় থেকে দোকান, গাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদি আমার নামে ক্রয় না করে নিজের নামে ক্রয় করে। দেখি আমার কোম্পানি দখল হয়ে গেছে। এই ১৪ বছরে ৬০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে উৎসব থেকে। ওই সময়টাতে শহীদুল্লাহ ও কাজলসহ অন্যরা মিলে এ টাকাগুলো লোপাট করেছে।

‘উৎসব পরিবহনের প্রকৃত মালিক আমি। কিন্তু এত বছর আমার নামে বাস চালিয়ে কোটি কোটি লোপাট করা হয়েছে। এর মধ্যে উৎসব ট্রান্সপোর্টের নামেও আমার বাস চালিয়েছে। এখন পুলিশ সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। নতুন করে আমরা বাস নামানোর পরিকল্পনা করছি। ভাড়া হবে ৩০ টাকা। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২০
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।