ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাঙ্গাবালীতে স্পিডবোট ডুবি: খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ পাঁচ জনের 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২০
রাঙ্গাবালীতে স্পিডবোট ডুবি: খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ পাঁচ জনের  কোস্টগার্ডের উদ্ধার অভিযান। ছবি: বাংলানিউজ

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার আগুনমুখা নদীতে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় পুলিশ সদস্য ও ব্যাংক পরিদর্শকসহ ৫ জন নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় আগুনমুখা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সময় নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত ও সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি ছিল।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দুর্যোগপূর্ণ এ আবহাওয়ার মধ্যে ১৮ জন যাত্রী নিয়ে রুমেন-১ নামে একটি স্পিডবোট কোড়ালীয়া থেকে পানপট্টির উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মাঝপথে আগুনমুখা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে স্পিডবোটটি উল্টে যায়। এসময় সাঁতরে ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় চালকসহ ১৩ জন জীবিত উদ্ধার হলেও বাকি ৫ জন নিখোঁজ হয়।  

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন- রাঙ্গাবালী থানার পুলিশ কনস্টেবল মো. মহিব্বুল্লাহ ও কৃষি ব্যাংক বাহেরচর শাখার পরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আশা ব্যাংকের খালগোড়া শাখার কর্মকর্তা কবির হোসেন, বিদ্যুতের কাজে আসা দিনমুজুর মো. ইমরান ও মো. হাসান মিয়া।

নিখোঁজদের সন্ধানে নদীতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ ও কোস্টগার্ডের কয়েকটি টিম। উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিতে পটুয়াখালী সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে আসার কথা রয়েছে।

দুর্ঘটনার শিকার কৃষি ব্যাংক বাহেরচর শাখার ব্যবস্থাপক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, নদীর মাঝখানে স্পিডবোট উল্টে গেলে তিনি নিচে চাপা পড়েন। আরো কয়েকজন এভাবেই চাপা পড়ে। কিছুক্ষণ পরে সেখান থেকে তারা বের হতে সক্ষম হন। পরে সাঁতার কাটতে শুরু করেন। সাঁতার কেটে পাশের একটি চরে গিয়ে উঠলে, স্থানীয়দের সহযোগিতায় তারা উদ্ধার হন। সেসময় যারা বোটের নিচ থেকে বের হতে পারেনি তারাই নিখোঁজ হয়েছেন।  

রাঙ্গাবালী থানার কনস্টেবল মহিব্বুল্লাহর মা অসুস্থ। তাই ছুটি নিয়ে তিনি বাড়ি যাচ্ছিলেন। তার বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক রাঙ্গাবালীর ইউএনও মাশফাকুর রহমান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুনসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালায়। বর্তমানে উপেজলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের উদ্যোগে উদ্ধার তৎপরতা চলছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতা অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। কোস্টগার্ডও ঘটনাস্থলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। খবর দেওয়া হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে। তবে তারা এখনো এসে পৌঁছেনি।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া ছিল। নদী বন্দরে ২ নম্বর ও সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল ছিল। এর মধ্যে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া স্পিডবোট চালানোর দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। বর্তমানে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে পৌঁছালে উদ্ধার অভিযান জোরালো হবে।  

তিনি আরও জানান, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্পিডবোট চালানোর কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দোষীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ