ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ধর্ষকের জামিন, মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
ধর্ষকের জামিন, মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি

পাবনা: ৭ মাস আগে পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের গোয়াল বাথান গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন মুলাডুলি শেখ পাড়া মহল্লার নিজাম উদ্দিনের ছেলে জাহিদ হোসেন।

 

সম্প্রতি জাহিদ জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় এসে ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী অসহায় দরিদ্র পরিবার বেশ উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তা মধ্যে দিনযাপন করছে।

এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতা ও সম্প্রতি ঘটনা উল্লেখ করে মামলার বাদী মেয়েটির মা থানাতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসের ২৭ তারিখে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয় গোয়াল বাথান গ্রামের এক ভ্যান চালকের মেয়ে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি মুলাডুলি গোয়াল বাথান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনার তিনদিন পর মার্চের ৩০ তারিখে মেয়েটির মা নিজে বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুইজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরে অভিযুক্ত একজন আসামি গ্রেফতার হলেও এখনো আত্মগোপনে রয়েছে মামলার দ্বিতীয় আসামি একই গ্রামের মৃত আজিবর প্রামানিকের ছেলে শান্ত মিয়া।  

ঘটনার দীর্ঘ সাত মাস অতিবাহিত হলেও ধর্ষণ মামলার অন্যতম দ্বিতীয় আসামিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারেনি পুলিশ। এ মামলার প্রধান আসামি জাহিদ হোসেন চলতি মাসের ১৯ অক্টোবর পাবনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। জামিনে মুক্ত হয়ে গ্রামে গিয়ে ধর্ষণের ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা তুলেনিতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।

কান্নাজড়িত কন্ঠে মেয়েটির বাবা বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্যার মামলা করে আমি মনে হয় ভুল করেছি। মামলার প্রধান আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে আমার বাড়ি সামনে দলবল বেধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাকে ও আমার অন্য সন্তানদের দেখলে হুমকি দিচ্ছে। ওরা প্রভাবশালী আমি গরীব মানুষ কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা। মেয়েটির এই রকম সর্বনাশ করে আবার আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। গরীবের বিচার পাওয়া খুব কঠিন স্যার। ’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত অরবিন্দ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার প্রধান আসামিকে ঘটনার পরে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। এ ধর্ষণের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ধর্ষকের বয়স ২১ বছর লেখা ছিল। আসামি পক্ষের আবেদনের আলোকে আদালতের নির্দেশনা নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে ছেলেটির বয়স ১৭ বছর প্রমাণিত হয়েছে। তবে মেয়েটির ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট আমরা হাতে পেয়েছি। সেখানে মেয়েটির ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসক রিপোর্ট দিয়েছে। নির্যাতিত মেয়েটি ২২ ধারায় মেজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া ওই দিনের ঘটনার ওই মেয়েটি পোশাক জব্দ করে আসামিকে সঙ্গে নিয়ে সিআইডির মাধ্যমে ব্যবহার্য পোষাকসহ আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টটি এখনো আমরা হাতে পাইনি। রিপোর্ট পাওয়া মাত্রই চার্জশিট দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।