ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নদীগর্ভে বিলীন বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন, শঙ্কায় নতুনটিও

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
নদীগর্ভে বিলীন বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন, শঙ্কায় নতুনটিও শ্রীপুর মহিষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার মুখে

বরিশাল: কালাবদর, তেঁতুলিয়া ও গণেশপুরা নদীর অব্যাহত ভাঙনে অসহায় হয়ে পড়েছেন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা। নদীগর্ভে সহায়সম্বল হারিয়ে কেউ কেউ পথের ভিখারিতে পরিণত হয়েছেন।

শুধু ব্যক্তি নয়, নদী ভাঙনে সরকারি বহু সম্পদও বিনষ্ট হয়েছে। তারপরও ভাঙন রোধে কার্যত কোনো ভূমিকা এখনও দৃশ্যমান হয়নি।

দুই মাসের ব্যবধানে শ্রীপুর ইউনিয়নের আরো একটি বিদ্যালয়ের দোতলা ভবন নদীতে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এই বিদ্যালয়েরই পুরাতন একতলা ভবনটি এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

গত ২৬ আগস্ট মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের চরবগী চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভবনটি মাত্র তিন বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিলো। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত শ্রীপুর ইউনিয়নে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

নদী ভাঙনে দিশেহারা শ্রীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা

চরবগী চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হওয়ার পর মাত্র দুই মাসের মাথায় এবার শ্রীপুর মহিষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনটি ৭ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। এই ভবনের পাশে থাকা পুরাতন একতলা ভবনটি এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিনা আক্তার জানান, নদীগর্ভে বিলীন হওয়া শ্রীপুর মহিষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন একতলা ভবনটিতে তিনটি কক্ষ ছিলো। ভবনটি দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ায় ২০১৩ সালে ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়। ওই বছরই নতুন নির্মাণ করা দোতলা ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

রিনা আক্তার বলেন, সেই সময় নদী বিদ্যালয় থেকে বহু দূরে ছিলো। কিন্তু গত কয়েক বছরের অব্যাহত ভাঙনে নদী এখন বিদ্যালয়ের সাথেই। ৫টি ক্লাস ও ১টি অফিস রুম থাকা দোতলা ভবনটি থেকে মাত্র এক থেকে দেড়হাত দূরে এখন নদীর অবস্থান। গত শুক্রবার পুরাতন ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

প্রধান শিক্ষক আরো জানান, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৬ জন শিক্ষক, একজন দপ্তরি ও প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৩৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবনটি ভাঙন ঝুঁকিতে চলে আসার পর থেকেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। মহামারি করোনাকাল শেষে কীভাবে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবে, তাদের পাঠদান কার্যক্রম কীভাবে শুরু হবে তা নিয়ে চিন্তিত সবাই।

শিক্ষা কার্যক্রমের বিকল্প ব্যবস্থা আগে থেকেই নেওয়া হবে বলে জানিয়ে প্রধান শিক্ষাক রিনা আক্তার বলেন, আগামী শুক্রবার বিদ্যালয়ের সব বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল ও ফার্নিচারসহ সব সামগ্রী একজন সহকারী শিক্ষকের বাড়িতে সরিয়ে নিয়ে রাখা হবে। বিদ্যালয়ের জন্য দুই-একজন জমি দিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সব মিলিয়ে বিদ্যালয় সচল রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।