ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আশা করেছিলাম সন্তানকে নিয়েই বাসায় ফিরবো

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়রকরেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
আশা করেছিলাম সন্তানকে নিয়েই বাসায় ফিরবো

ঢাকা: জন্মের পরপরই ঢাকা মেডিক্যাল (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর দাফনের মুহূর্তে হঠাৎ নড়েচড়ে উঠে আমার সন্তান।

সেখানে থেকে হাসপাতালে আনা হলে ভালোই চলছিলো সন্তানের চিকিৎসা। আশা করেছিলাম, সন্তান আমার ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে, তাকে নিয়ে বাসায় ফিরবো। বড় মেয়ের সঙ্গে খেলাধুলা করবে। অবশেষে আমাদের ছেড়ে চলে গেলো।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২১ অক্টোবর) রাতে ঢামেক হাসপাতালের ২১১ নম্বর নবজাতক ওয়ার্ডে সেই নবজাতকের মৃত্যুর পরে এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন বাবা ইয়াসিন মোলা।

ইয়াসিন মোলা বাংলানিউজেকে বলেন, মৃত্যুর আগে ওর নাম রেখেছিলেন মরিয়ম। আল্লাহর জিনিস আল্লাহ নিয়ে গেছেন। রাতের মধ্যেই দাফনের চেষ্টা করা হচ্ছে। বসিলা কবরস্থানে যেখানে আগে তার জন্য কবর খোঁড়া হয়েছিল। যেখানে নড়ে উঠেছিল, সেই কবরস্থানে চেষ্টা করছি দাফনের। অসুস্থ থাকায় নবজাতকের মাকে এখনও মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। সবাইকে নিষেধ করেছি নবজাতকের মা-কে সন্তান মৃত্যুর খবর না দেওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, এটা ছিল তার দ্বিতীয় সন্তান। নয় বছর বয়সী তার আরও একটি কন্যাসন্তান আছে। এ ঘটনার পরপরই হাসপাতালে তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং এ ঘটনার জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবং সে তদন্ত রিপোর্টে কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলা দায় স্বীকার করেন ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন এবং শিশুটি ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সব সময় তারা বলে আসছিলেন তার অবস্থা ভালো। পরিপূর্ণ সময় নিয়ে জন্মায়নি শিশুটা এর জন্যই তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।

এর আগে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালেঙ্গা গ্রামের সন্তান সম্ভাবনা গৃহবধূ শাহিনুরকে তার স্বামী ইয়াসিন মোল্লা গত তিনদিন আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এসে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। ওই ওয়ার্ডে শাহিনুর শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) ভোরের দিকে স্বাভাবিকভাবে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

নবজাতকের স্বজনরা জানান, জন্মের পরপরই ওই নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে ওই নবজাতককে একটি প্যাকেটে ভরে তার বাবা ইয়াসিনের কাছে হস্তান্তর করে চিকিৎসক বলেন, নবজাতকটি মৃতই জন্ম নিয়েছে। পরে ওই প্যাকেটে থাকা নবজাতকটিকে নিয়ে সকালে ইয়াসিন আজিমপুর কবরস্থানে যান। সেখানে অর্থনৈতিক কারণে তাকে দাফন করতে না পারায় একপর্যায়ে ইয়াসিন নবজাতকটিকে নিয়ে বসিলা কবরস্থানে গেলে সেখানের লোকজন তাকে দাফনের জন্য প্যাকেট খুললে নবজাতকটি নড়ে ওঠতে দেখেন। এ সময় চমকে যান ইয়াসিন। পরে তিনি দ্রুত নবজাতককে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। অবশেষে পাঁচদিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে বুধবার দিনগত রাতে শিশুটির মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
এজেডএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ