ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় ট্রিপল মার্ডার: মূল অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
খুলনায় ট্রিপল মার্ডার: মূল অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি

খুলনা: খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে ট্রিপল মার্ডার মামলার মূল অভিযুক্তরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুস সামাদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মিল্টন।

এরআগে সোমবার (১৯ অক্টোবর) খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের আদালতে জাকারিয়া ও রেজওয়ান শেখ রাজু ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা নিজেদের সম্পৃক্ততা বিবরণ দিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এনামুল হক বাংলানিউজকে জানান, মামলাটির মূল অভিযুক্তসহ এজাহারভুক্ত ২২ আসামির মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গত ১৬ জুলাই মশিয়ালী এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এঘটনার পর শেখ জাকারিয়া আত্মগোপনে যান। অনেকদিন চেষ্টার পর জাকারিয়াকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের হেফাজতে অবৈধ অস্ত্র আছে কি না, সে বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।

মশিয়ালী গ্রামের একটি মসজিদ কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সভাপতির পদ থেকে শেখ জাকরিয়াকে পদত্যাগ করতে বলে মিল শ্রমিক মুজিবরসহ মসজিদের মুসল্লিরা। সবার দাবির মুখে বাধ্য হয়ে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হয়ে ১৭ জুলাই জুমার নামাজের পর পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এর আগে ১৬ জুলাই বিকেলে জাকারিয়া ও তার ভাইয়েরা অস্ত্র দিয়ে মিল শ্রমিক মুজিবরকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদী এলাকাবাসীর ওপর জাকারিয়া-জাফরিন-মিল্টন বাহিনী নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০), একই এলাকার মো. ইউনুছ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) এবং পরে গুলিবিদ্ধ এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে আটরা মেট্রো টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (২২) খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে আফসার শেখ, শামিম, রবি, খলিলুর রহমান, মশিয়ার রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

অপরদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখ নিহত হন। এছাড়া হত্যাকারী সন্দেহে কয়েকজনের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া জাকারকে দল থেকে বহিষ্কার করে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ।  

১৮ জুলাই নিহত মো. সাইফুল ইসলামের বাবা মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া হোসেন জাকার, তার ভাই মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন, অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মিল্টনসহ ২২জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫ থেকে ১৬জনকে আসামি করে মামলা দায়ে (যার নম্বর-১২, ১৮-৭-২০২০ইং) করেন। এ মামলার এজাহারভুক্ত ২২ জন আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।