ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ভাল আচরণে সাজা কমলো ৫ বছর, ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত ফেরাতুল

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
ভাল আচরণে সাজা কমলো ৫ বছর, ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত ফেরাতুল

মেহেরপুর: বিস্ফোরক মামলায় ২০ বছরের সাজপ্রাপ্ত হয়েও জেলখানায় ছিল ফিরাতুল ইসলামের ভাল আচরণ। তাই তার পাঁচ বছর সাজা কমিয়ে ১৫ বছরে সাজার মেয়াদ দেন কারা কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ফেরাতুল মেহেরপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান। জেলখানা থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলগেটে তাকে মেহেরপুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তুষার কুমার পাল উপস্থিত থেকে ফেরাতুলের হাতে নগদ নগদ ১২ হাজার টাকা তুলে দেন এবং সেই সঙ্গে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষে থেকে ঘর করে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন।

এ সময় জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইদুর রহমান, প্রফেশনাল অফিসার সাজ্জাদ হোসেন, জেল সুপার মোখলেসুর রহমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।  

ফেরাতুল ইসলাম মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ইংরেজ আলীর ছেলে। একটি বিস্ফোরণের মামলায় দোষি প্রমাণিত হওয়ায় ফেরাতুলকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।  

জেল সুপার মোখলেসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ফেরাতুল ২০ বছর সাজাপ্রাপ্ত হলেও কারাগারে ভালো কাজ করায় তার সাজা ৫ বছর কমিয়ে ১৫ বছর পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  

তিনি আরো বলেন, কারাগারে থাকা কালে দুইবার স্ট্রোক হয় তার। এখন তিনি অনেকটাই প্রতিবন্ধী। কোনো রকমে নিজের চলা চলতে পারেন। স্বাভাবিক পরিবেশে চলতে তিনি অনেকটা অপ্রস্তুত।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইদুর রহমান, ফেরাতুল ইসলামকে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য নগদ টাকা দিয়েছেন।

এদিকে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান ফেরাতুল ইসলামের মুক্তি নিয়ে তার সরকারি ফেইসবুক পেইজে লেখেন, জীবনের ভুলগুলো তিনি (ফরাতুল) বুঝতে পেরেছেন এবং তিনি অনুতপ্ত। ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত। বাবা-মা অনেক আগেই মারা গেছেন। এখন একমাত্র আশ্রয়স্থল তার বোনের বাসা।

মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব ফরহাদ হোসেন এমপি স্যারের নির্দেশে এবং জেলা প্রশাসক, মেহেরপুর স্যারের প্রচেষ্টায় সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ফেরাতুলকে তাৎক্ষণিকভাবে ১২০০০ টাকার আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার চিকিৎসা সহযোগিতা দেওয়া অব্যাহত থাকবে। তার স্থায়ী আবাসের ব্যবস্থার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ফেরাতুল আমাদের সমাজেরই অংশ। মাঝে কিছুদিন পথভ্রষ্ট হয়ে অন্য জগতে গিয়েছিলেন। এখন এই ফেরাতুলকে আমরা সবাই মিলে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসি।

বাংলাদেশ সময়: ০২২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।