ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুজিববর্ষে সবার জন্য ঘর: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের তাগিদ

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
মুজিববর্ষে সবার জন্য ঘর: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের তাগিদ

ঢাকা: মুজিববর্ষের মধ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীন সব পরিবারের জন্য ঘর নিশ্চিতে সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে সরকার। উপকারভোগী নির্বাচন ও ঘরের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ এবং নির্দিষ্ট সময়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণ করেছে সরকার।

এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও পৌঁছে  দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সোমবার (১৯ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  

বৈঠকে দ্রুত সবার জন্য গুণগতমানের ঘর নিশ্চিতে কর্মবণ্টন ও করণীয় নির্ধারণের পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে উপকারভোগী নির্বাচন ও গৃহনির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পৌঁছে দেন।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মাহবুব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের (মুজিববর্ষ) মধ্যে সবার জন্য গুণগত মানের ঘর নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী যে সব নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়নে আমাদের টিম সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মাহবুব হোসেন জানান, ‘ক’ শ্রেণির অর্থাৎ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা (জুন ২০২০ পর্যলন্ত) মোট ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি এবং ‘খ’ শ্রেণি অর্থাৎ যার ১-১০ শতাংশ জমি আছে ঘর নেই/খুবই জরাজীর্ণ ঘর এমন পরিবার সংখ্যা (জুন ২০২০ পর্যন্ত) মোট ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি। ‘ক’ ও ‘খ’ দুই ক্যাটাগরিতে সর্বমোট পরিবারের সংখ্যা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২।

সোমবারের এ সভায় জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে প্রথম পর্যায়ে ‘ক’ শ্রেণি অর্থাৎ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধাপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সবগুলো বাড়ি সরকার নির্ধারিত একই ডিজাইনে নির্মাণ করা হবে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেট ও ইউলিটি স্পেসসহ অন্য সুবিধা থাকবে এসব বাড়িতে।

দ্রুত এবং গুণগত মান নিশ্চিত করে এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সংস্থা ও বিভাগ ভিত্তিক কর্মবণ্টন করা হয়েছে বলেও জানান আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প মো. মাহবুব হোসেন।

ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগে ৪১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৪ হাজার ৫৩৮টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প।

রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা বিভাগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় ৩৪৮ কোটি ৩৭  লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ হাজার ৩৭৩টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।  

চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় (CVRP) প্রকল্পের আওতায় ২৫৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪ হাজার ৮৯২টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৯ হাজার ৮০৩টি গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন, গুছগ্রাম-২য় পর্যায় (CVRP) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. ড. এ কে এম অয়ালী উল্লাহ ও আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক প্রান্ত থেকে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা মনিটরিং কমিটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
এমইউএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।