ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় দাঁড়ালেন মন্ত্রী, চেয়ারে বসে থাকলেন ইউএনও!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২০
মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় দাঁড়ালেন মন্ত্রী, চেয়ারে বসে থাকলেন ইউএনও!

নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদীর খিদিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বার্ধক্যজনতি রোগে অসুস্থ ছিলেন। গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফজলুল হকের বড় ভাই।

ওইদিন বিকেলে দলীয় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানাতে মহামারি করোনা সংক্রমণকে উপেক্ষা করে সেখানে নিজে জানাজায় উপস্থিত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।  

জানাজায় যখন দলীয় নেতাকর্মীরা মরহুম নেতা ও মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন তখন ঠাঁই দাঁড়িয়েছিলেন মন্ত্রী। এছাড়া উপজেলা সহকারী ভূমি ইকবাল হাসানসহ পুলিশ ও নেতাকর্মীরাও দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু পাশের চেয়ারে বসে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাফিয়া আক্তার শিমু। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়। আর তা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় অসন্তোষ। জেলাব্যাপী হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

এ ঘটনায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ইউএনও শাফিয়া আক্তার শিমু নিজেই পরিচয় দেন তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তার চাকরি হয়। সেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় রাষ্ট্রীয় সম্মান জানাতে গিয়ে একজন মন্ত্রী যখন দাঁড়িয়ে, ঠিক তখন একজন ইউএনও চেয়ারে বসে থাকেন কিভাবে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এটা বেয়াদবির চূড়ান্ত।

এর আগেও খিদিরপুর ইউনিয়নের একজন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল।

নুসরাত ইভা নামে একজন ফেসবুকে লিখেছে ‘একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় তিনি নিজে সম্মানিত হওয়ার জন্য উপস্থিত হতে পারেন না বরং বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শেষ বিদায়ে সম্মান জানানোই মুল উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত। উক্ত জানাযা আতিথ্য গ্রহণ করার সুযোগ নেই। আমরা জানি একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্মানীত ব্যক্তি তার মানে এই না যে তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে বেশি সম্মান বহন করে থাকেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্টির মহানায়ক। ’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, একজন মানুষ হিসেবে আমার সব সময় চেষ্টা থাকে সবাইকে সম্মান ও সহযোগিতা করার। দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে একজন যখন দীর্ঘ বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন মন্ত্রী মহোদয় চেয়ার থেকে উঠে বলেন বক্তব্য ছোট করতে। সময়টা ২-৩ সেকেন্ডের। এরই মধ্যে কেউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একটা ছবি তুলে। সেই ছবিটি ভাইরাল করা হয়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।