ঢাকা: আদিবাসী নারীর ওপর ক্রমাগত সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকল দোষীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কয়েকটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরাম, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।
বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক-এর সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ আদিবাসী যুব ফোরামের সদস্য সচিব এ্যান্টনি রেমার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খায়রুল চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, জনউদ্যোগের প্রতিনিধি তারিক হোসেন মিঠুল, এএলআরডি’র বুলবুল আহমেদ, কাপেং ফাউন্ডেশন-এর প্রতিনিধি থেকে উজ্জ্বল আজিম।
আরও সংহতি প্রকাশ করেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যাবিলন চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এর প্রতিনিধি হরেন্দ্র নাথ সিং, গারো স্টুডেন্টস ফেডারেশনের প্রলয় নকরেক, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অলীক মৃ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নাসির উদ্দিন প্রিন্স, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর এম এইচ রিয়াদ, মানবাধিকার কর্মী মাহবুব হক, বাগাছাস এর প্রতিনিধি বুশ নকরেক, মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, হাজং স্টুডেন্টস কাউন্সিল, মাদল, এফ মাইনর এবং অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
মানববন্ধনের শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমী। তিনি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত প্রায় আড়াইটার সময় খাগড়াছড়ি সদরের ১ নং গোলাবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রামে নিজ বাড়িতে দরজা ভেঙে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত প্রায় ৯ জন সেটেলার বাঙালি মানসিক প্রতিবন্ধী এক চাকমা নারীকে (২৬) গণধর্ষণ ও তাদের বাড়িতে লুটপাট করেছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কারণে আদিবাসী নারীর ওপর সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত বিচারহীনতা সংস্কৃতির কারণে এ ধরনের ঘটনা বারংবার ঘটছে।
রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ধরনের ধর্ষণ হয়েছিল, সেটিই শেষ ধর্ষণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বাধীন এই বাংলাদেশে এখন এত বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছে কেন? আদিবাসী নারীর প্রতি যে সহিংসতা ঘটছে তা রাষ্ট্রের একটি হাতিয়ার যা আদিবাসীদের উচ্ছেদেরই একটি অংশ।
খাইরুল ইসলাম বলেন, আদিবাসী নারীদের জন্য আলাদা বিচার ব্যবস্থা ও এর সাথে যুদ্ধাপরাধীদের মতো অপরাধীদের ধরে বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। আদিবাসী নারী ধর্ষণ ও সহিংসতা সেটি জাতিগত নিপীড়নের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
পাবর্ত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী নারীর প্রতি সহিংসতা জাতিগত নিপীড়ন ও জাতিগত নিধনের একটি প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক-এর সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
এমজেএফ