ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

এমসি’র ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: পালিয়ে রক্ষা হলো না মাহফুজের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
এমসি’র ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: পালিয়ে রক্ষা হলো না মাহফুজের

সিলেট: সিলেট মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৬ নম্বর আসামি ছাত্রলীগ কর্মী মাহফুজুর রহমান মাছুমকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মাহফুজ তার মামার মাধ্যমে পালিয়ে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেন।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে কানাইঘাট থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা মাহফুজুর রহমান কানাইঘাটের দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের লামা দলইকান্দি গ্রামের সালিক আহমদের ছেলে ও এমসি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।  

সিলেটের কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম বাংলানিউজকে জানান, মাহফুজকে হরিপুর তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মামা তাকে এখানে এনে রেখে যান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিলেটের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তাকে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ নিয়ে মামলার এহাজার নামীয় ৬ আমামির ৫ জনসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে, রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলার কচুয়া নয়াটিলা এলাকা থেকে রাজন ও তার সহযোগী আইনুলকে আটক করে র্যাব।

ওই মামলার আরেক আসামি মাহবুবুর রহমান রনিকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে আটক করে র্যাবের একটি দল। এদিন নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ।

এছাড়া রোববার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে ছদ্ববেশে ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। আর পৃথক অভিযানে নগর গোয়েন্দা পুলিশ অর্জুন লস্করকে মাধবপুর থেকে গ্রেফতার করে।

এদিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় সোমবার তিন আসামি সাইফুর, অর্জুন ও রবিউলকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগরের শাহপরান (র.) থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্রাচার্য্য। শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের পাঁচদিন করে রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইদুর রহমান।  

শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটক রেখে এক নারীকে ছাত্রলীগের ৬ জন নেতাকর্মী গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পত্তিকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ জানায়, দক্ষিণ সুরমার নবদম্পতি শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেটকারে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। বিকেলে এমসি কলেজের ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী স্বামী-স্ত্রীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে প্রথমে মারধর করেন। পরে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেন। ছাত্রলীগ নেতাদের প্রত্যেকেই ছাত্রাবাসে থাকেন। তারা টিলাগড় কেন্দ্রীক আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার গ্রুপের অনুসারী।

এ ঘটনায় শনিবার ভোর রাতে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনকে অভিযুক্ত করে নগরের শাহপরান থানায় এ মামলা দায়ের করেন নির্যাতিত ওই নারীর স্বামী।

এছাড়া ঘটনার পর অভিযানে নেমে সাইফুরের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন শাহপরান (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২০
এনইউ/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।