ঢাকা: বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এতদিন বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ দু’টি নীতিমালার মাধ্যমে চলতো। এখন দেখা যাচ্ছে যে শুধু নীতিমালা দিয়ে সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না, সুনির্দিষ্ট আইন প্রয়োজন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আইনের খসড়া নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, বেসিরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের একাডেমিক অনুমোদন, নবায়ন, শিক্ষা কার্যক্রম এবং কত ছাত্র থাকবে ও কী সুবিধাদি থাকবে, শিক্ষকের কী যোগ্যতা থাকবে, কলেজগুলো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে, অর্থ ব্যবস্থাপনা কেমন থাকবে- এ বিষয়গুলো আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মেডিক্যাল কলেজে প্রতি ১০ জন ছাত্রের জন্য একজন শিক্ষক এবং ন্যূনতম ছাত্র থাকতে হবে ৫০ জন। প্রত্যেক বিষয়ে ন্যূনতম পাঁচজন করে শিক্ষক থাকতে হবে।
নীতিমালায় অনেক কিছু পরিষ্কার না থাকায় অনেক মেডিক্যাল কলেজ অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে চালানো হয় জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২৫ শতাংশের বেশি খণ্ডকালীন শিক্ষক রাখা যাবে না, ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে।
ডেন্টাল কলেজের জন্য দুই কোটি এবং মেডিক্যাল কলেজের জন্য তিন কোটি টাকা রিজার্ভ ফান্ড রাখার বিধান রয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
আর মেডিক্যাল কলেজে ২৫০ শয্যা এবং ডেন্টালে কমপক্ষে ৫০ শয্যার মধ্যে বিনা পয়সায় চিকিৎসায় ১০ শতাংশ শয্যা গরিব মানুষের জন্য রাখতে হবে।
আইনে বর্জ্য ব্যস্থাপনার বিধান রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মেডিক্যাল বর্জ্যগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, নরমাল ডাম্পিংয়ে রাখলে হবে না। এখান থেকে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া বা রোগ-জীবাণু ব্যাপক প্রসারিত হয়।
মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের জন্য অবশ্যই নিষ্কণ্ঠক জমি থাকতে হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মেট্রোপলিটনে কমপক্ষে দুই একর এবং মেট্রোপলিটনের বাইরে চার একর জমি থাকতে হবে।
আইন লঙ্ঘন করলে দণ্ডের কথা উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দুই বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। আইনের শর্ত না মানলে মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজের অনুমোদন বাতিল করে দেওয়া হবে।
এখন যে ভাড়া বাসায় মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে কী হবে- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনে বিস্তারিত থাকে না। এজন্য বিধিমালা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিধিমালা বা নীতিমালায় স্পষ্ট করে দেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বর্তমানে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ৭০টি এবং ডেন্টাল কলেজের সংখ্যা ২৬টি। আর সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ৩৬টি এবং সরকারি ডেন্টাল কলেজ একটি।
তিনি আরো বলেন, যে বিভাগের যে মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজ থাকবে সেই বিভাগের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এবং যে বিভাগের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেখানে সার্কুলার দিয়ে বলে দেওয়া থাকবে কার অধীনে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
এমআইএইচ/এএ