ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে ভোগান্তিতে রংপুরবাসী 

মাহফুজুল ইসলাম বকুল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে ভোগান্তিতে রংপুরবাসী 

রংপুর: ১০০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে রংপুর শহরের অধিকাংশ এলাকা। কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে সড়কসহ বাড়িঘর ও স্থাপনা।

ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
 
নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয়রা। বাড়িঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় তাদের কোনো যাওয়ার জায়গা নাই বলে জানিয়েছেন। ফলে বাধ্য হয়ে স্কুল-কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। কেউবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।  

তারা জানান, হঠাৎ করে এভাবে জলাবদ্ধতায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তাদের। বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে মূল্যবান কাগজপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও ব্যবসায়িক মালামাল, জিনিসপত্র ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও নষ্ট হওয়ার পথে। বিশেষ করে যারা একতলা বাড়িতে থাকেন তাদের বিছানাপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আশেপাশের স্কুল কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই।

নগরীর সমাজকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়েও অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েকটি ভবন খুলে দিয়েছেন। এখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন জানান, এতো বড় একটি দুর্যোগে আগে থেকে সিটি করপোরেশন অথবা আবহাওয়া অফিস কেউই কোনো সতর্কবাণী বা পূর্বাভাস দেয়নি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েছেই।

>>রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রংপুর শহর

আশ্রয় নেওয়া মুলাটোল থানা মোড় এলাকার গৃহিণী আছিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বাড়ির বিছানার ওপরে পানি উঠেছে। সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ব্যাবসায়িক কয়েক লাখ টাকার বই নষ্ট হয়েছে।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নুরজাহান বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, আমি ছোট ব্যবসায়ী। ভাড়া বাড়িতে থাকি। হঠাৎ এই পানিতে মালামালসহ বাড়ির সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তিল তিল করে গড়ে তোলা সংসারের সবকিছু নষ্ট হয়ে গেলো।

এদিকে হঠাৎ এই জলাবদ্ধতায় নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই না খেয়ে আছেন। এতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় অনেক স্বেচ্ছাসেবী। নিজেদের উদ্যোগে খাবার রান্না করে সরবরাহ করছেন তারা।

এদিকে পানি বন্দিদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি দল। তারা নৌকায় করে মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।  

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত ১০০ বছরের ইতিহাসে রংপুরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। এই ধারা আরও দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।