ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গাংনীতে ঠিকাদারের মামলায় আটকে আছে ৩ রাস্তার উন্নয়ন কাজ

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
গাংনীতে ঠিকাদারের মামলায় আটকে আছে ৩ রাস্তার উন্নয়ন কাজ খানা-খন্দে ভরা বেহাল সড়কগুলো। ছবি: বাংলানিউজ

মেহেরপুর: টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে গরমিলের কারণ দেখিয়ে আদালতে ঠিকাদারের মামলার কারণে গাংনী উপজেলার তিনটি আঞ্চলিক সড়কের উন্নয়ন কাজ প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ রেয়েছে। ফলে খানা-খন্দে ভরা ওই তিনটি সড়ক এখন এলাকাবাসীর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

রাস্তা তিনটি হলো- গাংনী উপজেলার বামুন্দী-কাজিপুর, কাজিপুর-নওদাপাড়া ও আকুবপুর-মোহাম্মদপুর হয়ে গোয়ালগ্রাম পর্যন্ত।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে বামুন্দী-কাজিপুর সড়ক ১ কোটি ৫ লাখ, মোহাম্মদপুর-গোয়ালগ্রাম সড়ক ১ কোটি ১৩ লাখ ও নওদাপাড়া-কাজিপুর সড়ক সংস্কারে প্রায় ৩ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। পরে আদালতে ঠিকাদার খোড়া একটি অজুহাত দেখিয়ে মামলা দিলে ওই সড়কগুলোর সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।  

তবে ঠিকাদার চুয়াডাঙ্গা জেলার জাকাউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, একই দিনে নয়টি কাজের লটারি হয়। এর মধ্যে ছয়টি কাজের অর্ডার দিলেও অন্য তিনটি কাজে এলজিইডির ভুল আছে অজুহাত দেখিয়ে কাজের পুনরায় টেন্ডার দেয়। ফলে দরপত্র আহ্বানের পরও কার্যাদেশ না পাওয়ায় আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।

মেহেরপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও কাজিপুর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মুনসুর আলী বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক তিনটি এই এলাকার অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। সবজি ভাণ্ডার এই এলাকা থেকে প্রতিদিনই শত শত সবজি বোঝাই ট্রাক দেশের বিভিন্ন জেলার কাঁচাবাজারে রপ্তানি হয়। ঢাকা যাওয়ার একমাত্র পথও ওই তিনটি সড়ক। সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এলাকার লক্ষাধিক মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। পঙ্গুত্ববরণ করতে হচ্ছে অনেককেই।
 
কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, তিনটি সড়কেই ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কগুলো খানা-খন্দে পরিণত হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাস-ট্রাক, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল উল্টে মারা যাওয়াসহ অনেকেই পঙ্গু হচ্ছেন। খানা-খন্দ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ছে যানবাহন। বর্তমানে ওই রাস্তাগুলো চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এ এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যেরও নেমেছে ধস।

গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাপ আলী বাংলানিউজকে বলেন, মামলাটি প্রায় শেষের পথে। হাইকোর্ট কর্তৃক যে নির্দেশনা আমাদের দেবেন সে নির্দেশনা মতেই পরবর্তীকালে  পদক্ষেপ নেবো।

মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বাংলানিউজকে বলেন, যে সব কারণে আদালতে মামলা হয়েছে, তা নিরসনে এলজিইডি ও ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাদের উদ্যোগী হয়ে সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে। তারা উভয়ে আলোচনার মাধ্যমে মামলাটি দ্রত নিষ্পত্তি করে রাস্তা সংস্কার শুরু করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।  

তিনি আরও বলেন, এলজিইডিতে যে সমস্ত কর্মকর্তা আছেন তাদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কেন বারবার ভুল করবে আর সে ভুলের মাশুল ঠিকাদার বা জনগণ দেবে।

তবে এলাকাবাসীর দাবি মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে রাস্তা তিনটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হোক।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।