ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বদলে যাচ্ছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদিঘি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
বদলে যাচ্ছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদিঘি রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদিঘি। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদিঘি ছিল অন্যতম বিনোদনকেন্দ্রের। এর পানি এতটাই স্বচ্ছ ছিলো যে, তা দিয়ে এলাকাবাসীর রান্নার কাজও চলতো।

পানিতে যাতে কেউ ময়লা ফেলতে না পারে, তা তদারকির দায়িত্বে থাকতেন রাজশাহী পৌরসভার কর্মচারীরা।  

পদ্মানদীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল এই দিঘিটি। ভরা বর্ষা মৌসুমে পদ্মানদীর পানি ঢুকতো দিঘিতে। নদীর ঘোলা পানি থিতিয়ে যাওয়ার পর দেখা মিলতো স্বচ্ছ পানির। ১৯৮০-৮১ সালের দিক থেকে সোনাদিঘির চারপাশে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়। ফলে ঢাকা পড়ে সোনাদিঘির চারদিক। রাস্তা থেকে আর সোনাদিঘি দেখা যেতো না।  

সোনাদিঘির হারানোর ঐতিহ্য ফিরে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)। বদলে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই দিঘি।  

দিঘিটিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে ১৬ তলাবিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার’, পায়ে হাঁটার পথসহ মসজিদ, এমফি থিয়েটার (উন্মুক্ত মঞ্চ) ও তথ্যপ্রযুক্তি পাঠাগার। এই লক্ষ্যে কাজ দ্রুতগতিতেই এগিয়ে চলেছে।  

জানা যায়, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর সোনাদিঘির সংস্কারে উদ্যোগ নেন। এসময় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় ‘এনা প্রপার্টিজ’ নামে একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১৬ তলাবিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণ ও সোনাদিঘিকে সাজানোর চুক্তি করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। তার দায়িত্ব শেষ হওয়ার পরবর্তী পাঁচ বছর এ প্রকল্পের কাজ থেমে যায়। পরে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিটি সেন্টার ও সোনাদিঘিটিকে সাজানোর কাজে গতি ফেরান মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থাপনা, মসজিদ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সোনাদিঘিকে উন্মুক্ত করা হয়েছে। বৈধ ব্যবসায়ীদের সিটি সেন্টারে পুর্নবাসন করা হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোনাদিঘি মসজিদকে সিটি সেন্টারের স্থানান্তর করা হয়েছে। এরপর শুরু হয় স্থাপনা ভাঙার কাজ।  

সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্মাণ কাজ সিটি সেন্টার হবে অন্যতম বাণিজ্যকেন্দ্র। সোনাদিঘি হবে দৃষ্টিনন্দন বিনোদনকেন্দ্র। সোনাদিঘিকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার পুরো চিত্রই পাল্টে যাবে। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও এর সুফল ভোগ করবেন।  

নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি আগের মতোই নগরের একটি বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হবে। এই দিঘির চারপাশে পর্যাপ্ত বসার জায়গা রাখা হবে। দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন স্বচ্ছ পানির জলাধার। থাকবে ফোয়ারা। সংস্কার শেষ হলে তিন দিক থেকে সোনাদিঘিকে দেখা যাবে।

জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ঐহিত্যবাহী সোনাদিঘি পাড়ে নবনির্মিত সিটি সেন্টার হবে রাজশাহীর সবচেয়ে চমৎকার আধুনিক বহুতল ভবন। সোনাদিঘিকে কেন্দ্র করে উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হবে। কাজ শেষে সোনাদিঘি ফিরে পাবে তার ঐতিহ্য ও নিজস্ব স্বকীয়তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।