ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আগামী বাণিজ্য মেলা শেরে বাংলা নগরেই!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
আগামী বাণিজ্য মেলা শেরে বাংলা নগরেই! বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার

ঢাকা: ব্যয় না বাড়িয়ে ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’ (বিসিএফইসি) প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হচ্ছে। ফলে আগামী বাণিজ্য মেলা সেখানে হবে কি না তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরেই প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। আর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্য মেলার নতুন ঠিকানা হওয়ার কথা ছিল পূর্বাচলের ওই নতুন ঠিকানায়।  

পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে চীনা সরকারের অনুদানে নির্মিত হচ্ছে ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’।  

প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আরও তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে। জায়গা নিয়ে জটিলতা আছে। ওই এলাকার রাস্তাঘাটও ভালো নয়।  

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, প্রদর্শনী কেন্দ্রের মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। তবে আনুষঙ্গিক কিছু কাজও বাকি রয়েছে। সে কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে।

তবে সরকার চাইলে আগামী বাণিজ্য মেলা প্রদর্শনী কেন্দ্রে নিতে পারে বলেও জানায় ইপিবি সূত্র।  

প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন,  “বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াতে হবে। তবে ব্যয় বাড়াতে হবে না। মেলা প্রাঙ্গণকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে আরও কাজ করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধা করে দিতে আরও এক বছর সময় লাগবে। ”

চলতি বছরে বাণিজ্য মেলা কি পূর্বাচলে হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সরকার চাইলে বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে হতে বাধা নেই। ”

ইপিবি সূত্র জানায়, ১ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের ওপর বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারপার্সন এ এইচ এস আহসান। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর কনফারেন্স কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রকল্প পরিচালক জানান, যেহেতু প্রকল্পের সব কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না, সে কারণে প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) ৭ মের সভায় ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মতিক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেওয়া হলে মন্ত্রণালয়টি এ বিষয়ে আইএমইডি ও ইআরডিকে সম্মতি দিতে অনুরোধ জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ইআরডির সম্মতি পাওয়া গেছে। আইএমইডির সম্মতি পেলে ব্যয় বাড়ানো ছাড়াই প্রকল্পের মেয়াদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক বছর বাড়ানো সম্ভব হবে।  

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এক্সিবিশন সেন্টারের সব কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চীনা পক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি কারিগরি কমিটি এবং একটি বুঝে নেওয়া কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “এক্সিবিশন সেন্টারটি ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোডের মোড় থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সহজ ও স্বল্প ব্যয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই। রাস্তাগুলো ভালো অবস্থায় নেই। ”

তিনি সেখানে উল্লেখ করেন, সেন্টারের পাশ দিয়ে যে ঢাকা-বাইপাস রাস্তা গেছে, তা সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন এবং এক্সিবিশন সেন্টার সংলগ্ন অন্যান্য ফিডার রাস্তা রাজউকের। সেখানে ডিআইটিএফসহ অন্যান্য বাণিজ্য প্রদর্শনীর করতে হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) মাধ্যমে বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তা না হলে সেখানে সব শ্রেণির স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও মেলা সফলভাবে আয়োজন করা কঠিন হবে।

ইপিবি সূত্র বলছে, বিসিএফইসি প্রকল্পের জন্য দুই পর্যায়ে বরাদ্দ করা ২৬ দশমিক ১০ একর জায়গার মূল্য বাবদ মোট ১৬৫ টাকা রাজউককে ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ করা ২৬ দশমিক ১০ একর জমির লিজ দলিল রাজউক থেকে তৈরি করে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া হচ্ছে না। ২৬ দশমিক ১০ একর জমির মধ্যে ২০ একর জমি রাজউকের মাস্টার বিসিএফইসি প্রকল্পের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ আছে। বরাদ্দকৃত অবশিষ্ট ১৬ দশমিক ১০ একর জমি রাজউকের বর্তমান মাস্টারপ্ল্যান বিসিএফইসি প্রকল্পের জন্য সংরক্ষিত বলে উল্লেখ নেই।

প্রকল্পটির ওপর গত ৫ জুলাই এক সভায় রাজউকের মাস্টার প্ল্যানে যে ১০ একর জমি বিসিএফইসি প্রকল্পের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ আছে, তা এখনই রেজিস্ট্রেশন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, “আইএমইডির সম্মতি পেলে প্রকল্পটির আরও একবছর সময় বাড়ানো হবে। তবে এ একবছরেও প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব না। পরবর্তী সময়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংশোধনীর প্রয়োজন হবে। মোট কথা আরও তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে। ”

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
এমআইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad