ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ড্রেজিং করা পলি ফের নদীতেই ফেলছে বিআইডব্লিইটিএ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
ড্রেজিং করা পলি ফের নদীতেই ফেলছে বিআইডব্লিইটিএ ড্রেজিং করা হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে নাব্যতা ঠিক রাখতে বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং শুরু করেছে। তবে নদীর পলি মাটি ড্রেজিং করার পর তা ফের নদীতেই ফেলা হচ্ছে।

 

এদিকে নদীতে ড্রেজিং করে ফেরি চলাচলের জন্য নাব্যতা ঠিক রাখতে যে কাজ বিআইডব্লিউটিএ করছে তা কি শুধু লোক দেখানো এমন প্রশ্ন যানবাহনের চালক ও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের।

গত ৩০ আগস্ট থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের মূল চ্যানেল সচল রাখতে সৃষ্ট ডুবোচর কাটতে এ ড্রেজিং এর কাজ হাতে নেয় বিআইডব্লিউটিএ। ডুবোচর কেটে ফেরি চলাচলের জন্য মূল চ্যানেলের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এমন দাবি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের। তবে ফেরি সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে নদীর পলি মাটি ড্রেজিং করে নদীতে ফেলার কারণে নদীর তলদেশের স্রোতে সেই পলি মাটি পুনরায় ডুবোচরের সৃষ্টি করছে এবং ফেরি চলাচলে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক সময় ফেরিঘাটের পন্টুনের পকেট বন্ধ রেখে ড্রেজিং করতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের নাব্যতা ঠিক রাখতে নদীতে ড্রেজিং করা হচ্ছে তবে ড্রেজিং এর মাটি ফেরির পন্টুনের কাছাকাছি ফেলার কারণে নদীর তলদেশের পলি মাটি স্রোতে পুনরায় ফিরে আসছে এবং ডুবোচরের সৃষ্টি হচ্ছে। ফেরিঘাটের মূল চ্যানেল সচল হলেও ডুবোচরের পলি মাটির কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  

পাটুরিয়া ফেরিঘাটের ৪টি পন্টুন সচল থাকলেও মাঝে মাঝে ড্রেজিং এর কারণে অনেক সময় একটি করে পন্টুন বন্ধ রেখে ড্রেজিং করার কারণে ওই সংশ্লিষ্ট পন্টুন দিয়ে ফেরি লোড আনলোড বন্ধ থাকছে। যে কারণে ঘাট এলাকায় যানবাহনের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। অন্যদিকে ড্রেজিং করায় ফেরিঘাটের মূল চ্যানেল সচল রাখছে বিআইডব্লিউটিএ কিন্তু ড্রেজিং এর পলি মাটি নদীতে ফেলায় পুনরায় ডুবোচরের সৃষ্টি হওয়াতে এ ড্রেজিং এর কাজ প্রতিনিয়ত করতে হচ্ছে আর এ ড্রেজিং করতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে বিআইডবিরউটিএ কর্তৃপক্ষের।

ফরিদপুরগামী ট্রাকচালক নজরুল বাংলানিউজকে বলেন, দেখছি নদীতে ফেরি চলাচলের জন্য ড্রেজিং করছে কর্তৃপক্ষ কিন্তু এ দায়সারা ড্রেজিং না করাটাই ভালো। কারণ ড্রেজিং এর পলি মাটি-তো নদীর তীরের কাছেই ফেলা হচ্ছে, এ পলি আবার স্রোতে সঙ্গে নদীর তলদেশে ডুবোচরের সৃষ্টি করবে। তখন নানা অজুহাতে আমাদের মতো অসহায় ট্রাক চালকদের আবার ঘাট এলাকায় ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকতে হবে।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লিউটিসির এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে গত কয়েকদিন ধরে ড্রেজিং করছে বিআইডব্রিউটিএ কর্তৃপক্ষ। নদীতে ড্রেজিং করার একটাই কারণ নদীতে ফেরি চলাচলের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা কিন্তু ড্রেজিং করে সেই ডুবোচরের পলি মাটি ফেরিঘাটের পন্টুনের খুব কাছাকাছি ফেলা হচ্ছে কারণ তারা প্রতিনিয়ত ড্রেজিং করবে এবং এখান থেকে তারা কোনো সুবিধা নেওয়ার জন্য এ কাজটি বারবার করছে। অনেক সময় ফেরিঘাটের পন্টুন বন্ধ রেখে ড্রেজিং করতে হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যস্ততম ঘাটের একটি পন্টুন বন্ধ থাকলে তিনটি পকেট বন্ধ রাখতে হয়। একটি পন্টুনে তিনটি পকেটে এক সঙ্গে তিনটি ফেরি লোড আনলোড করা সম্ভব আর কিছু সময় বন্ধ থাকলে এর প্রভাব পড়ে ঘাট এলাকায়। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ড্রেজিং এর কাজ শেষ করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হোক।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের ড্রেজিং এর দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী আক্কাস মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।