ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নীতি-নির্ধারক ও তরুণদের জন্য বস্তুনিষ্ঠ বার্তা দেবে হোয়াইটবোর্ড: রাদওয়ান মুজিব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০
নীতি-নির্ধারক ও তরুণদের জন্য বস্তুনিষ্ঠ বার্তা দেবে হোয়াইটবোর্ড: রাদওয়ান মুজিব রাদওয়ান মুজিব

ঢাকা: সদ্য শুরু হওয়া হোয়াইটবোর্ড নীতি-নির্ধারক ও তরুণদের জন্য বস্তুনিষ্ঠ ও স্পষ্ট বার্তা দেবে বলে জানিয়েছেন ম্যাগাজিনটির প্রধান সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।  

রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ওয়েবিনারে পলিসি ম্যাগাজিন হোয়াইটবোর্ড’র উদ্বোধনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

 

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সামিয়া হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ম্যাগাজিনের সহ-সম্পাদক সৈয়দ মফিজ কামাল। সম্পাদকীয় উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য সামিয়া হক।

সিআরআই এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হোয়াইবোর্ড’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এই ম্যাগাজিনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে বিস্তর পর্যালোচনা করবে। ম্যাগাজিনটি মূলত তরুণদের জন্য- এমনটা জানিয়ে রাদওয়ান মুজিব বলেন, আমরা আমাদের মূল পাঠক তরুণদের কথা শুনতে সর্বদা প্রস্তুত।

হোয়াইটবোর্ড আত্মপ্রকাশ নিয়ে এডিটরস নোটে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক লেখেন, আমরা এখন কেনো এই উদ্যোগ নিলাম? কারণ তরুণদের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ এখন দ্রুত উন্নতি করছে এবং নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশের তালিকায় স্থান পেতে চায় বাংলাদেশ।  

তিনি বলেন, কিন্তু আমাদের দেশে কী হচ্ছে, তার তথ্য নির্ভর কোন বিশ্লেষণ নেই। আর সে কারণেই হোয়াইটবোর্ড’র যাত্রা শুরু। দেশে ও দেশের বাহিরে থাকা শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রফেশনাল, নীতি নির্ধারক ও বাস্তবায়নকারীদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপন করবে হোয়াইটবোর্ড। এখানে অর্থনীতি থেকে শুরু করে জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা, টেকনোলজিক্যাল উদ্ভাবন থেকে শুরু করে তরুণদের কর্মসংস্থান সবকিছু নিয়ে তথ্যনির্ভর বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করা হবে। সেখানে কিছুই বাদ যাবে না।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'সবাইকে নিয়ে চলো' নীতি বঙ্গবন্ধুই প্রথম গ্রহণ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক রাদওয়ান মুজিব।

বঙ্গবন্ধুর নেওয়া নীতি নির্ধারণগুলো এখনো কীভাবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখছে, তা তুলে ধরে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক বলেন, বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশ তার জন্ম লগ্নের কিছু নীতি-নির্ধারনীতে ফিরে গেছে, যার মধ্যে একটি ছিলো 'বন্ধুত্ব সবার তরে, কারো প্রতি শত্রুতা নয়'।  এর ফলে অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

এর প্রথম সংখ্যায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ার জন্য নেওয়া নীতি-নির্ধারণ ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

এ সংখ্যায় প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, মানবাধিকার কর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিস এবং সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান, অধ্যাপক শামস রহমান এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞানী রওনক হাসানের মত মানুষের লেখা স্থান পেয়েছে।

এবারে ম্যাগাজিনে 'ইমারজিং ফ্রম দ্য ভিলেজ টু মার্ক অ্যা নিউ কান্ট্রি অন দ্য ম্যাপ', 'মুজিব'স ইকোনমিক পলিসিস অ্যান্ড দেয়ার রিলিভেন্স টুডে', ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট থ্রু পলিটিক্যাল স্ট্যাবেলিটি', ‘জাস্ট লাইক টুডেস প্রোগ্রেসিভ পলিটিক্স’, 'বাকশাল ওয়াজ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ইন ন্যাচার', 'বাংলাদেশ'স কনস্টিটিউট অব ১৯৭২: অ্যান এক্সপোজিশন অব মুজিবস পলিটিকাল ফিলসফি', হাউ মুজিব কো ম্যানেজড অন অব দ্য লার্জেস্ট রিলিফ অপারেশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড', 'ফ্রেন্ডশিপ টুওয়ার্ডস অল ওয়াজ অ্যা মাস্টারস্টোক' এবং 'মুজিবস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পলিসি অ্যাকশন টাইমলাইন' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়াও বিস্তারিত এক সাক্ষাৎকারে সৈয়দ বদরুল আহসান বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) নিয়ে তৈরি হওয়া ভুল ধারণাগুলোর ওপর আলোকপাত করেন। 'বাকশাল শব্দটি অনেক সমালোচিত বা মর্যাদাহানীকরভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এটিকে বঙ্গবন্ধুর লালন করা দ্বিতীয় বিপ্লব হিসেবে বর্ণনা করা উচিত। মুজিবুর রহমানের প্রথম বিপ্লব ছিলো মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ। আর দ্বিতীয় বিপ্লবটি ছিলো দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রগতির। তিনি এভাবেই বিষয়টিকে দেখেছিলেন। '- সাক্ষাৎকারে এভাবে বাকশাল নিয়ে কথা বলেন সৈয়দ বদরুল।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে জুলিয়ান ফ্রান্সিস বলেন, 'যুদ্ধের সময় দেশের সকল যোগাযোগ, সামাজিক এবং শিল্প অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়- ব্রিজ, রোড, কালভার্ট, রেললাইন এবং নৌ-বন্দর।

প্রায় ৩০০ সড়ক ও রেললাইনের ব্রিজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। প্রায় ১৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষয়-ক্ষতি হয় শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থায়। দেশের মূল বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর প্রায় ধ্বংস করে দেওয়া হয়। ১৮ হাজার প্রাইমারি স্কুলের পাশাপাশি প্রায় ২২ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জন সম্পদের মোট ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করে দাঁড়ায় ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। শেখ মুজিবুর রহমানের সামনে এমন বড় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিলো, বিশেষত পুনর্নির্মাণ কার্যক্রমের প্রথম ধাপে।  এই প্রায় অসম্ভব কার্যক্রম নিজেদের সহযোগীদের সহায়তার বেশ দ্রুত বাংলাদেশ সরকার শুরু করে। এ ছাড়াও নতুন করে ৪৩ মিলিয়ন ঘর নির্মাণ করতে হয়।

বর্তমান তরুণরা অনেক উন্নয়ন কার্যক্রম দেখছে, কিন্তু তার বীজ বপন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নীতি নির্ধারণের সুফল এখন ভোগ করছি আমরা যার বর্ণনা রয়েছে এই ম্যাগাজিনে। বঙ্গবন্ধু এই অপ্রকাশিত তথ্যগুলো জানিয়ে তার জন্মশতবার্ষিকীতে তার প্রতি সম্মান জানানো হয়েছে। নীতি নির্ধারকদের বাতিঘর হিসেবে কাজ করবে ম্যাগাজিনের এই সংখ্যা, যেখানে বঙ্গবন্ধুর নীতি নির্ধারণী কার্যক্রম সম্পর্কে জানার মাধ্যমে তার দেখানো পথে হাঁটতে পারবে বর্তমান নীতি নির্ধারকেরা।

হোয়াইটবোর্ডের পরবর্তী সংখ্যায় জাতীয় নীতি নির্ধারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থান পাবে। যেখানে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ওয়েবিনারে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আরো জানান, হোয়াইটবোর্ড’র পরবর্তী সংখ্যায় কোভিড-১৯ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর নিয়ে আলোচনা থাকবে।

সৈয়দ মফিজ কামাল জানান, হোয়াইবোর্ড’র উদ্বোধনের কারণ- আমরা বিশ্বাস করি এর মাধ্যমে দেশের নীতি নির্ধারকদের জন্য নতুন আইডিয়া প্রদান করতে পারবো। আমাদের ম্যাগাজিনের গুণগতমান সেই বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর  ২১, ২০২০ 
এমইউএম/ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।