ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজশাহীর চরাঞ্চলে পানির সংকট দূর করছে পাতকুয়া

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
রাজশাহীর চরাঞ্চলে পানির সংকট দূর করছে পাতকুয়া

রাজশাহী: পানি সংকটের কারণে বরেন্দ্র অঞ্চল ও রাজশাহীর পদ্মার চরে চাষাবাদ করা কষ্টসাধ্য। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন নিচে নামছে।

ফলে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পানির অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

পানির সংকট দূরীকরণ ও চাষাবাদে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে পাতকুয়া কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এর মাধ্যমে সরাসরি সুবিধা পাচ্ছেন প্রায় আট হাজার মানুষ। ফলে স্বল্প খরচে পদ্মার চরে সেচ কাজে পানির নিশ্চয়তা দৃঢ় হয়েছে।

জানা যায়, পাতকুয়া ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের নিচ পর্যন্ত গোলাকার আকৃতিতে মাটি
খনন করে চারপাশ থেকে চুয়ানো পানি ধরে রাখার আধার। আধুনিক প্রযুক্তি আসার আগে বরেন্দ্র অঞ্চলসহ রাজশাহীর গ্রামে সুপেয় পানির নির্ভরযোগ্য আধার ছিল পাতকুয়া। নলকূপসহ পানি উত্তোলনের বিভিন্ন প্রযুক্তি আসার পর পাতকুয়ার ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

এ অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামতে থাকায় চাপ কমাতে বিকল্প পদ্ধতির বিষয়ে চিন্তা করছিলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) প্রকৌশলীরা। ফলে তারা পাতকুয়া স্থাপনের প্রয়োজন অনুভব করেন। তবে স্থাপিত পাতকুয়াতে তারা দিয়েছেন আধুনিকতার ছোঁয়া। আগে বালতি ও রশি দিয়ে পানি উত্তোলন হতো। এখন সৌর প্যানেলের মাধ্যমে যান্ত্রিকভাবে সেচকাজে ব্যবহার হচ্ছে এই পাতকুয়ার পানি।

বিএমডিএ সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চর মাঝারদিয়াড়ে পাতকুয়া ও সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় এখানে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়েছে। এই পানি ব্যবহার করছে প্রায় ৮ হাজার মানুষ। ফলে স্বল্প খরচে পদ্মার চরে পানির নিশ্চয়তা, খাদ্য ও সবুজায়ন সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

জানতে চাইলে বিএমডিএ’র প্রকল্প পরিচালক নাজিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহীর পবা উপজেলার চর মাঝারদিয়াড়ে সেচ কাজে পানির নিশ্চয়তায় দুইটি এলএলপি (নদী থেকে পানি উঠানো) এবং চারটি স্থানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পাতকুয়া থেকে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিটি সোলার প্যানেল ও পাতকুয়ায় ব্যয় হয় ১৩ লাখ টাকা। এতে ভূগর্ভে পানির লাইন আছে এক একটিতে ৩৬০ মিটার পর্যন্ত।

বিএমডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী জিননুরাইন খান বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের জীবনে এ প্রকল্প আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। পাতকুয়া ব্যবহারে আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি ব্যবহার করা সম্ভব। এই পানি গ্রামের মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজসহ কৃষি কাজে ব্যবহার করতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
এসএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।