ঢাকা, শনিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

ওজোন ক্ষয় রোধ করে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করুন: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৩৯, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
ওজোন ক্ষয় রোধ করে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করুন: প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: বায়ুমণ্ডলীয় ওজোন ক্ষয় রোধ করে জীববৈচিত্র্য রক্ষার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বায়ুমণ্ডলীয় ওজোন ক্ষয়কারী দ্রব্যের উৎপাদন ও ব্যবহার রোধ করে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যকে সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

একই সঙ্গে জনসচেতনতা সৃষ্টি, বনায়ন, পরিবেশ বান্ধব বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলের জীবন রক্ষাকারী প্রতিরক্ষা স্তর সুরক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার দেওয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সম্প্রতি কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করলেও একটি দীর্ঘ সময় পুরো পৃথিবী একসঙ্গে লকডাউন হওয়ায় বায়ুদূষণ কমে প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল এবং পৃথিবী একটি গাঢ় সবুজ গ্রহে পরিণত হয়েছিল, যা নিশ্চিতভাবে ওজোনস্তর পুনর্গঠনে সহায়ক হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওজোনস্তর সূর্য থেকে নিঃসরিত অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাবে মানব দেহে চর্ম-ক্যান্সার, চোখের ছানিসহ অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ, শষ্যকে বিবিধ বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ওজোনস্তর রক্ষার জন্য ১৯৮৫ সালে ভিয়েনা কনভেনশন এবং এর আওতায় ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। ফলে বিগত ৩৫ বছরে পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষয়িষ্ণু ওজোনস্তর ধীরে ধীরে পুনর্গঠিত হতে শুরু করেছে এবং সূর্যালোক মানুষসহ পৃথিবীর সকল জীবের জন্য নিরাপদ হচ্ছে।

বিশ্ব ওজোন দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রাণ বাঁচাতে ওজোন’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

পরিবেশ রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিলেন। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির পর তিনি অন্যান্য গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশব্যাপী বনায়ন ও উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করেছিলেন।

ওজোনস্তর ও পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওজোনস্তর পুনর্গঠনে নানামুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা ইতোমধ্যে দেশে এইচসিএফসিসহ অধিকাংশ ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৪৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে এবং ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর জিডিপির এক শতাংশ বা দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতুল্য অর্থ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে অভিযোজনের উদ্দেশ্যে ব্যয় করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান তার সরকার গ্রিন-হাউজ গ্যাস নির্গমন বন্ধ করার লক্ষ্যে প্যারিস চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ আদালত আইন-২০১০, বিপজ্জনক জাহাজ ভাঙার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০১১ এবং ২০১৪ সালে একটি সংশোধিত ও পরিমার্জিত ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করেছে।

জাতীয় পরিবেশ নীতি-২০১৮, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন-২০১৯ এবং বিশুদ্ধ বায়ু আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা দেশে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন জিসিএ’র দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিস চালুর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ