ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সাইনবোর্ড-বিলবোর্ড থেকে ৩ দিনে কোটি টাকার বেশি আয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
সাইনবোর্ড-বিলবোর্ড থেকে ৩ দিনে কোটি টাকার বেশি আয়

ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকায় অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড এবং ব্যানার অপসারণে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।  

অভিযানের আগেই এসব বোর্ডের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে অনুমতি নিতে আহ্বান জানায় ডিএনসিসি।

এতে সাড়া দিয়ে প্রথম ৩ দিনে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সাইনবোর্ড-ব্যানার-বিলবোর্ডের জন্য নির্ধারিত কর দিয়ে অনুমতি নেয়। আর এর মাধ্যমে ডিএনসিসির আয় হয়েছে এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা।

মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে অবৈধ ব্যানার, বিলবোর্ড অপসারণে অভিযানে নামে ডিএনসিসি। এর আগে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এবং ঘোষণার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদেরকে কর দিয়ে নির্ধারিত পরিমাপে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড এবং অন্যান্য ব্যানারের অনুমতি নেওয়ার আহ্বান জানায় সংস্থাটি। এতে শেষ ৩ দিনে ডিএনসিসির কোষাগারে জমা পড়ে প্রায় এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা।  

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে মোট কতগুলো প্রতিষ্ঠান কর দিয়ে আগাম অনুমতি নিয়েছে সেই সংখ্যা এখনও জানায়নি সংস্থাটি।  

এদিকে অভিযানে গিয়ে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এই শহরটা কিন্তু আমাদের, এই শহরে আমরা উপার্জন করি। আমাদের বাচ্চারা পড়াশোনা করে, এই শহরে আমরা বড় হয়েছি। এ শহরকে ভালোবাসতে হবে। যে ঘরে আমি থাকি সেই ঘরের প্রতি যদি মায়া না করি, যে ঘরে থাকি সে ঘরে যদি থুথু ফেলি, তাহলে হবে না। এই যে আজকে বড় বড় ডেভেলপাররা কীভাবে তাদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিল, সিটি করপোরেশনকে কোন ধরনের ট্যাক্স না দিয়ে? এই শহরে আপনাদের এত বড় বড় ব্র্যান্ডিং করবেন, আপনি ব্যবসা করবেন, আর সিটি কর্পোরেশনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কোন ট্যাক্স দেবেন না, এটি হতে পারে না। আমি সবাইকে বলতে চাই শহরে কোন ধরনের সাইনবোর্ড লাগাতে গেলে, আগে দেখুন সিটি কর্পোরেশনের নিয়ম কী? বিদেশে তো আপনারা এরকম করতে পারবেন না। এদেশে কেন করবেন? 

তিনি আরও বলেন, এই দেশেরও অভিভাবক আছে। জনগণ চায় সিটি পরিষ্কার থাকুক। জনগণ চায় তারা ফুটপাত দিয়ে যেন নির্বিঘ্নে হাঁটতে পারে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ফুটপাত সড়কে অবৈধভাবে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী নিলাম করে দিচ্ছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজ সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড ইত্যাদি অপসারণ করছি। আমি জনগণকে অনুরোধ করবো আপনারা আমাদেরকে জানান। এরকম কোন কোন ফুটপাত ও রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী রেখে দেয়।  

মেয়র আরো বলেন, এই শহরে তারা ব্যবসা করছেন, তারা ট্যাক্স দেবেন না কেন? সিটিকে সুন্দর করতে গেলে সিটি কর্পোরেশনকে ট্যাক্স দিতে হবে। আজকে আমরা গুলশান, বনানী এবং প্রগতি সরণিতে অভিযান শুরু করেছি। বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপন করার জন্য নীতিমালা আছে। এগুলো লাগানোর সময় নীতিমালা মানতে হবে। আমরা এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। মিডিয়ায় প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানিয়েছি, প্রত্যেকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, এমনকি মাইকিংও করা হয়েছে। অনেকেই গত দুই দিনে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে অনুমোদন নিয়েছেন। একটি শহরের ভেতরে এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চলতে পারে না। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি ফুটপাত ও সড়কে রাখা অবৈধ মালামাল উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে।  

অভিযানের প্রথম দিনে গুলশান ২ নম্বরে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হামিদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ১৫০টি অবৈধ সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়।

বনানী ১১ নম্বর সড়কে অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় প্রায় শতাধিক সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে দখল করে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির কারণে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

এছাড়াও প্রগতি সরণিতে অঞ্চল-৬এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরিনের পরিচালনায় উচ্ছেদ অভিযানে মোট ৫২টি সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ফুটপাত ও সড়কে অবৈধভাবে মালামাল রাখায় তা নিলামে ৬৬ হাজার ৭০০ টাকা নিলামে বিক্রয় করা হয় এবং ৯টি মামলায় ৪৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযান চলাকালে অন্যান্যদের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এসএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।