ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নৌসচিবের কথায় দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা ট্রাকচালকদের 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
নৌসচিবের কথায় দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা ট্রাকচালকদের  কথা কলছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট ছেড়ে গেছে কে-টাইপ ফেরি ক্যামেলিয়া। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছেড়ে যায় ফেরিটি।

১৪টি মালবাহী ট্রাক বহন করে শিমুলিয়ার তিন নম্বর রো রো ঘাট থেকে ছেড়ে গেছে ফেরিটি। কিন্তু এরপর থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আর কোনো ফেরি যানবাহন নিয়ে ছাড়তে দেখা যায়নি।

শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, আর কোনো ফেরি চলবে না এই নৌরুটে। পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালু করেই সব ফেরি চলাচলের কথা বলছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। এতে করে দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা আছে বলে অভিযোগ করেছেন পারের অপেক্ষায় থাকা চালকরা।  

নৌরুট পরিদর্শন শেষে নৌসচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, পদ্মার চর অনবরত ভেঙে চ্যানেলে পড়ছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে লৌহজং চ্যানেল। এখন বিকল্প পথ হিসেবে হাজরাচর ও কবুতরখোলা চর দিয়ে ফেরি চলাচলের পরিকল্পনা চলছে। তবে এর জন্য ড্রেজিং করে নৌ-পথ চালুর জন্য সময় লাগবে ২০-২৫ দিন। এছাড়া লৌহজং চ্যানেল দুইদিনের মধ্যে চালু করা হবে। এ সময়ের মধ্যে ভোগান্তি কমাতে পালের চর দিয়ে আজকের মধ্যে ফেরি চলাচল শুরু করে দিচ্ছি।  

অভিযোগ করে চালকরা জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে নৌসচিবের ফেরি চলাচলের বক্তব্য শুনে অনেক মালবাহী গাড়ি এ পথে আসবে। এসে দেখবে ফেরি বন্ধ। এতে করে দুর্ভোগ বাড়বে। বাস্তবতা হচ্ছে, একটি ফেরি ঘাট ছাড়ার পর আর কোনো ফেরি চলেনি।

শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা জানান, এই রুটের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার এবং পালের চর দিয়ে খেজুরতলা-নড়িয়া হয়ে কাঁঠালবাড়ি পৌঁছাতে সময় লাগবে প্রায় সাত ঘণ্টা। বিকেল পর্যন্ত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের বহরে থাকা ১১টি ফেরির মধ্যে পরীক্ষামূলক শুধু একটি ফেরি ছেড়ে গেছে। এটি চালুর পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ফেরি চলাচলের জন্য এই পথটি উপযোগী কিনা। আর কোনো ফেরি আজকে চলবে না। তবে নৌসচিবের এমন বক্তব্যের ব্যাপারে কেউ মন্তব্য করতে রাজী হননি।

এদিকে নৌপথ পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী আরো জানান, অ্যাম্বুলেন্স এর মতো জরুরি বাহনগুলোকে এই পথ ব্যবহার না করার জন্য নিরুৎসাহিত করা হবে। তাদের দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুট ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।  

বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবদুর নূর তুষার জানান, ১৪টি মালবাহী ট্রাক নিয়ে কে-টাইপ ফেরি ক্যামেলিয়া যাত্রা করেছে। এতে সাত ঘণ্টা সময় লাগবে। এ ফেরিতে যাত্রীবাহী গাড়ি বা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়নি। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের বহরে আছে ১১টি ফেরি।  

বিআইডব্লিউটিএ এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, পালের চর নৌপথটি দিয়ে সব ধরনের ফেরি চলতে পারবে। সময় বেশি লাগলেও ফেরি চলতে গিয়ে কোনো বাধায় পড়বে না। বিআইডব্লিউটিসি এই নৌপথ দিয়ে সহজেই ফেরি চালাতে পারবে।  

বিকেল ৫টায় মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা সিরাজুল কবির জানান, শিমুলিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় আছে ৩০টির মতো পণ্যবাহী যানবাহন। তবে নতুন করে কোনো গাড়ি এখনো আসছে না বলেও জানান তিনি।  

চালকরা অভিযোগ করে জানান, একটি ফেরি চালু করে ঘাট কর্তৃপক্ষ সব ফেরি চালুর কথা বলছে। এতে করে দূর দূরান্ত থেকে অনেক মালবাহী গাড়ি এই ঘাটের দিকে আসছে। এর ফলে দুর্ভোগ কমাতে গিয়ে আবার জনসাধারণকে বিপদে ফেললো ঘাট কর্তৃপক্ষ। অনেক গাড়ি ঘাটে আসবে পদ্মা পাড়ের জন্য। চালকদের দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।