ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করালেন ছাত্ররা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করালেন ছাত্ররা ...

বরিশাল: বরিশালে বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করানোর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে এই শিক্ষক ঘটনার সময় সেখানে কর্মরত ছিলেন না।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয় সেই ঘটনাটি ১ মাস আগের বলে জানা গেছে।

ভিডিও ভাইরাল হওয়া ওই শিক্ষক পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আয়লা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বরিশাল নগরের রুপাতলীস্থ জম জম ইনস্টিটিউটে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর বাইরেও তিনি পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে পৃথক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন।

সবশেষ করোনাকালে তিনি পুনরায় জম জম ইনস্টিটিউটে অনলাইনে মেডিকেল ডিপ্লোমার কয়েকটি ক্লাস নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুল হক। তবে তাকে পরবর্তীতে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রীকে বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে অনৈতিক প্রস্তাব দেব না শপথ করে সাবেক ওই শিক্ষককে কান ধরে-ওঠ-বস করানো হচ্ছে। ভিডিওতে কয়েকজনের কণ্ঠস্বর শোনা গেলেও কাউকে দেখা যায়নি। তবে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর পাশের একটি ছবিতে বোরকা পরিহিত এক ছাত্রীকে দেখা গেলেও তার মুখমণ্ডল দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক জানান, জমজম ইনস্টিটিউটের রূপাতলী শাখায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম। মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সসহ স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সম্পর্কিত নানা কোর্স ইনস্টিটিউটে পড়ানো হয়। আমি ম্যাটস বিভাগের শিক্ষক ছিলাম। ২০১৮ সালে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দেই। তবে করোনাকালে মার্চ মাসে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অনলাইনে কয়েকটি ক্লাস নিয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে ইমন ও তার স্ত্রী মনিরা ছিল। তারা ক্লাস ফাঁকি দিত ও লেখাপড়ায় অমনোযোগী ছিল। তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে বলা হয়। কিন্তু তারা কর্ণপাত না করে উল্টো পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাইয়ে দিতে নানা সময় তাদের বহিরাগত বন্ধুদের দিয়ে চাপ দিয়ে আসছিল। পাশাপাশি ইমন আমাকে কখনও সালাম দিত না। এ নিয়ে ইনস্টিটিউটের কয়েকজন ছাত্র ইমনকে ভর্ৎসনা করেছিল। তবে সালাম না দেওয়া নিয়ে আমার মাথাব্যথা ছিল না। তারপরও ইমন আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।

ভুক্তভোগী শিক্ষক বলেন, ২৬ আগস্ট হাতেম আলী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ইমন ও তার ৬-৭ জন বন্ধু আমার পথ রোধ করে। এরপর তারা আমার মুঠোফোন ও মোটরসাকেলের চাবি নিয়ে যায়। সেখান থেকে আমাকে তারা জোর করে অক্সফোর্ড মিশন রোড এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর আমাকে সেখান থেকে গোরস্তান রোডে নিয়ে মারধর করে তারা। এই সময় ইমনের সঙ্গে ৬-৭ জন যুবক ছিল। একজনের হাতে লাঠি ছিল। তাদের কিল-ঘুষিতে আমার নাক ফেটে যায়। মারধরের এক পর্যায়ে ইমন আমাকে কান ধরে ওঠ-বস করায়। এরপর ইমন আমাকে কিছু কথা বলতে বাধ্য করে। সেগুলো একজন মুঠোফোনে ধারণ করে।

জমজম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুল হক জানান, আমাদের সাবেক এই শিক্ষককে নগরেরর কোনো একটি জায়গায় তুলে নিয়ে কয়েকজন ছাত্র তাকে নির্যাতন করে এবং কান ধরে ওঠবস করিয়েছে। ঘটনাটি ১ মাস পূর্বে ঘটলেও ৪/৫ দিন আগে ভিডিওটি আমি দেখেছি। এরপর ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।