ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনায় ৮০ মিলিয়নেরও বেশি শিশু চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২০
করোনায় ৮০ মিলিয়নেরও বেশি শিশু চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও ইউনিসেফ নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, শিশুদের প্রয়োজনীয় সেবা দান এবং নিয়মিত কর্মসূচিগুলো অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব তীব্র উদ্বেগের একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই মহামারিকে শিশুদের সংকটে পরিণত হতে দিতে পারি না।

নিউইয়র্কে ইউনিসেফ নির্বাহী বোর্ডের দ্বিতীয় নিয়মিত অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বব্যাপী শিশুরা যে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হয়েছে, তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

তিনি বলেন, কোভিডের প্রভাবে ৮০ মিলিয়নেরও বেশি শিশু চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি দাড়িয়েছে। ১.৬ বিলিয়ন শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। আর ১ বছরের কম বয়সী ৮০ মিলিয়ন শিশু জীবনরক্ষাকারী ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কোভিডের ফলে ক্ষুধার্ত শিশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬ মিলিয়নে। বিশ্বজুড়ে ইউনিসেফের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিবেদিত সেবাদানের মাধ্যমে অস্বাভাবিক এই পরিস্থিতিতে যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, তার জন্য ধন্যবাদ জানান ইউনিসেফ নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি।

নজীরবিহীন এই সংকট মোকাবিলায় কর্মসূচি গ্রহণের ক্ষেত্রে ইউনিসেফকে সৃজনশীল চিন্তাভাবনা ও উদ্ভাবনশীল সমাধানে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। পাশাপাশি জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ওপরও জোর দেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

চলতি অধিবেশনে ইউনিসেফের ‘কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডকুমেন্ট’ গুলোর বিষয়বস্তু ‘শিক্ষা’ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অনলাইন ও দূরশিক্ষণে প্রবেশাধিকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান নির্বাহী বোর্ড সভাপতি। প্রতিটি স্কুলকে ইন্টারনেটের সঙ্গে এবং প্রতিটি যুবককে তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রয়াসে গৃহীত ইউনিসেফ ও আইটিইর যৌথ পদক্ষেপ ‘গিগা’ এর সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি সব অংশীদারকে মহৎ এই কাজে তাদের দক্ষতা ও আর্থিক বিনিয়োগের মাধ্যমে অবদান রাখার আহ্বান জানান।

কোভিড-১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে মেয়েরা বিশেষ ঝুঁকিতে রয়েছেন মর্মে উল্লেখ করে মেয়েদের অগ্রগতি নিশ্চিত, মর্যাদা রক্ষা ও নিগ্রহ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নারী শিক্ষায় আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা ও বৈষম্য এবং ঋতুজনিত স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সচেতনতা ও সুবিধার অভাবসহ এ জাতীয় নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা দূর করে নারী ও মেয়েদের পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।

পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধের বিষয়টিতে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দেন। বৈশ্বিকভাবে ১ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু-কিশোরের মৃত্যুর ক্ষেত্রে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রধান একটি কারণ এবং এ কারণে বিশ্বে প্রতিবছর তিন লাখ ২০ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য এজেন্সি এবং এনজিওগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে দেশ পর্যায়ে ডুবে মৃত্যু রোধের পক্ষে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ আরও জোরদার করতে ইউনিসেফের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক মিজ হেনরিয়েটা এইচ ফোর। তিনি ইউনিসেফের বিস্তারিত কার্যক্রম এবং প্রতিষ্ঠানটি যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, তা তুলে ধরেন।

অধিবেশনটিতে সদস্য দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধি ও প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২০
টিআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad