ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফের অস্বাভাবিক জোয়ারে রামগতি-কমলনগর পানির নিচে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
ফের অস্বাভাবিক জোয়ারে রামগতি-কমলনগর পানির নিচে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত এলাকা। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের মেঘনা নদীর ফের অস্বাভাবিক জোয়ারে অন্তত ৪০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে তেলিয়ে গেছে হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।

ভেসে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ। এছাড়াও কাঁচা ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। পানির তোড়ে বিভিন্ন সড়ক ভেঙে গেছে। পানিবন্দি হয়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।  

বুধবার ( ১৯আগস্ট) দুপুর থেকে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ফুট বেড়ে যায়। হাজার হাজার পরিবার এখন জোয়ার আতঙ্কে। একইভাবে গত ৫ আগস্টের কয়েক দফা জোয়ারে রামগতি ও কমলনগরে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

গত চার দশক ধরে রামগতি ও কমলনগরে মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যায়। বেড়িবাঁধ না থাকায় এখন অরক্ষিত দু' উপজেলা। যে কারণে জোয়ার এলেই প্লাবিত হয়।

দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। ফসলি জমি-মাঠ পেরিয়ে পানি ঢুকে পড়ে বসতঘরে। জোয়ারে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৬ থেকে ফুট বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।  
 
জোয়ারে স্রোতে রামগতির সহস্রাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাস্তাঘাট ও পুল-কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এতে অভ্যন্তরীণ কয়েকটি সড়কে যোগাযোগ ব্যাহত হয়, দুভোর্গে পড়ে চলাচলকারীরা। বেড়িবাঁধ না থাকায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী বালুরচর, সুজনগ্রাম, জনতা বাজার, মুন্সীরহাট, সেবাগ্রাম, চরআলগী, বড়খেরী, চরগাজী, চরগজারিয়া, চর মুজাম্মেল ও তেলিরচর এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। পানিতে প্লাবিত হয় মুন্সীরহাট বাংলাবাজার, জনতা বাজার ও চেয়ারম্যান বাজার।

এদিকে কমলনগরে চর কালকিনি, চর মার্টিন, চর লরেন্স, সাহেবেরহাট, ফলকন ও পাটারিরহাট ইউনিয়ন পানির নিচে ডুবে যায়। নাছিরগঞ্জ, মাতাব্বরহাট, বাঘারহাটসহ উপকূলীয় হাট-বাজারগুলো পানিতে তলিয়ে আছে।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা থেকে রামগতি পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৩২ কিলোমিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় কমলনগর উপজেলা চর কালকিনি, সাহেবেরহাট, চর ফলকন, চর লরেন্স ও পাটারিরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা এখন জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে।

জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকরা জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এছাড়া তাদের পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।  

চরকালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার সাইফুল্লাহ বলেন, জোয়ারের পানিতে আমার ইউনিয়ন এখন ডুবে আছে। রাস্তাঘাটে চলাচল করা যায় যাচ্ছে না।  

কমলনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর বলেন, জোয়ার এলেই কমলনগর ডুবে যায়। ফের অস্বাভাবিক জোয়ারে উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পানির নিচে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
এসআর/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।