ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পিরোজপুরে জোয়ারের পানিতে ৭৫ গ্রাম প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
পিরোজপুরে জোয়ারের পানিতে ৭৫ গ্রাম প্লাবিত প্লাবিত এলাকার মানুষকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। ছবি: বাংলানিউজ

পিরোজপুর: পিরোজপুরে জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে ৭৫টি গ্রাম  প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, কাঁচা-পাকা রাস্তা, মাছের ঘের, অধিকাংশ বাড়ির আঙিনাসহ সবজি ক্ষেত ও বাগান তলিয়ে গেছে।


 
জানা গেছে, জেলার মধ্য থেকে বয়ে কালিগঙ্গা, তালতলা, মধুমতি, কচা, সন্ধ্যা ও বলেশ্বর নদীতে স্বাভাবিকের থেকে জোয়ারের পানি দুই ফুট বেশি হয়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে জোয়ারের অতিরিক্ত পানি এসে ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে।  

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার প্রায় নয়টি, কাউখালী উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রাম, মঠবাড়িয়া উপজেলার দুই থেকে তিন গ্রাম, ভান্ডারিয়া উপজেলার আট, সদর উপজেলার চার, নাজিরপুরে ১৫, নেছারাবাদ উপজেলার ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।  
জেলা প্রশাসক আবু আলী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, যেকোনো ক্ষতি বা পানিবন্দি পরিবারকে সব রকম খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও ছোট খাট সাহায্য দিতে প্রস্তুত আছি।  

জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমীন জানান, ওই উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে কালাইয়া, পূর্ব ইন্দুরকানী, খোলপতুয়া, ট্যাংরাখালী, চন্ডিপুর, সাউদখালী, চরবলেশ্বর, পাড়েরহাটের আবাসন এলাকা, চরখালী ফেরিঘাট এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ওই সব এলাকার অধিকাংশ বাড়ি প্লাবিত হয়ে কোনো কোনো ঘরে পানি উঠেছে বা পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা বিরাজ করছে।  

জেলার কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মনু জানান, ওই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে সবজি ক্ষেতসহ মাছের ঘেরের বেশ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ওই উপজেলার বিশিষ্ট সমাজসেবক আব্দুল লতিফ খসরুর নিজস্ব উদ্যোগে বুধবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানিবন্দি অসহায় পরিবারকে খাবার পৌঁছে দেন বলে স্থানীয়রা জানান।  

মঠবড়িয়া পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. শাহাদাৎ হোসেন খান বাবু জানান, পৌর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে জোয়ারের পানি উঠলেও ভাটার সময় তা নেমে যায়। তিনি আর জানান, আর একটু পানি বাড়লেই তার ঘরে পানি উঠবে।  

ভান্ডারিয়া পৌর এলাকার মো. সফিকুল ইসলাম মিলন জানান, উপজেলার তেলিখালী, হরিনপালা, বোতলা, ঝুনিয়া, নদমুলা,হ্যাতালিয়া, দারুল হুদা গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠেছে। এছাড়া পৌর এলাকার প্রায় অর্ধশত পরিবার ইতোপূর্বে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  

সদর উপজেলার কলাখালী ইউনিয়নের কলাখালী গ্রাম, হুলারহাট ও বেকুটিয়ার নদী তীরবর্তী এলাকা, জুজখোলা গ্রামের কিছু অংশ পানিতে প্লাবিত হয়েছে।  

নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো. অলিউল্লাহ জানান, তার ইউনিয়নের মনোহরপুর, পদ্মডুবি, দেউলবাড়ি, সোনাপুর, উত্তর গাওখালী, উত্তর পাকুরিয়াসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।  
উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাসানাত ডালিম জানান, ওই ইউনিয়নের খলনি, কাশ্মির, মুনিরাবাদ, পাতাখালীসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার কিছু কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ওই উপজেলার সাচীয়া, ঝনঝনিয়া,  শ্রীরামকাঠীর ইউনিয়নের পূর্বকালিকাঠী মধুরাবাদ, কাছিচিড়া এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।  

জেলার  নেছারাবাদ উপজেলা  আ. হক  জানান, উপজেলার আরামকাঠী, কামারকাঠী, জগন্নাৎকাঠী, সদর, জলাবাড়ি, আটঘর কুরিয়ানার কিছু অংশসহ নয়-১০টি গ্রামে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। তবে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতা হয় না। ফলে স্থানীয়দের খুব বেশি ভোগান্তি হচ্ছে না।
 
জেলার নাজিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম মণ্ডল জানান, পানি বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করে ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য চাষিদের তাদের ঘেরের মাছ রক্ষার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মৎস্য চাষিদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়াসহ তদারকি করা হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।