ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর জন্য ৫০ হাজার বার কোরআন খতম করলো এতিম শিশুরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২০
বঙ্গবন্ধুর জন্য ৫০ হাজার বার কোরআন খতম করলো এতিম শিশুরা দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টরা, ছবি: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

ঢাকা: মুজিবর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিদর্শন এবং তিনিসহ সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক লাখ বার পবিত্র কোরআন খতমের উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি শিশু পরিবার এবং বেসরকারি এতিম খানার শিশুরা। এরইমধ্যে ৫০ হাজার বার কোরআন খতম করেছে তারা।

 এতে অংশ নিয়েছে প্রায় ৭১ হাজার শিশু।

শুক্রবার (১৪ আগস্ট) সকালে ৫০ হাজার বার পবিত্র কোরআন খতম এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এ কথা জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

সমাজসেবা অধিদপ্তর এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিল। সমাজসেবা অধিদপ্তর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ দোয়া মাহফিলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু।

গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কোরআন খতমের তথ্য তুলে ধরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, মুজিবর্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিদর্শন এবং তিনিসহ সব শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবার, ৩ হাজার ৯২৮টি ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ডপ্রাপ্ত বেসরকারি এতিমখানার নিবাসীরা এক লাখ বার পবিত্র কোরআন খতমের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল।

তিনি জানান, গত মার্চ থেকে শুরু করে ৮২টি সরকারি শিশু পরিবার ও দুই হাজার ৮৭০টি বেসরকারি এতিমখানার ৭০ হাজার ৮৫০ জন নিবাসী ৫০ হাজার বার পবিত্র কোরআন খতম করেছে। সে উপলক্ষে আজকের এই মিলাদ মাহফিল।

অনুষ্ঠানে সরকারি শিশু পরিবারের এতিম শিশুদের মধ্যে দুইজন শিশু কথা বলে। তারা শিশু পরিবারগুলোতে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে।

দোয়া মাহফিলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্টের সব শহীদ, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনসহ ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনার পাশাপাশি দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে দোয়া করা হয়।

কোরআন খতমের জন্য এতিম শিশুসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা কোরআন খতম করেছো এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

১৫ আগস্ট বাবা-মাসহ সবাইকে একসঙ্গে হারানোর কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এতিম হওয়ার কষ্টটা আমরা বুঝি।

এতিম শিশুদের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা একেবারে একা না। আমরা আছি তোমাদের পাশে। আমি এবং আমার ছোট বোন সবসময় তোমাদের কথা চিন্তা করি।

এতিম শিশুদের লেখাপড়া করে নিজেদের তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমাদের মধ্যে অনেক মেধাবী আছো, যারা একদিন এই দেশে অনেক বড় কাজ দেশের জন্য করতে পারবে। মানুষের জন্য করতে পারবে। সেভাবে কাজ করবে। সততা নিষ্ঠা একাগ্রতা নিয়ে কাজ করবে।

তিনি বলেন, নিজেদের যদি দেশের জন্য তৈরি করো বড় হয়ে আরও এতিমদের জন্য সাহায্য করতে পারবে। তাদের পাশে দাঁড়াতে পারবে। তাদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে সহায়তা করতে পারবে।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ শিশুদের পুনর্বাসনে চাইল্ড প্রটেকশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধ শিশুদের সেখানে লালন-পালন, চিকিৎসা, শিক্ষা, দত্তক দেওয়া ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হতো। আজকের শিশু পরিবার তারই পরিবর্তিত রূপ।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবার এবং ৬টি ছোটমনি নিবাস রয়েছে। ছোটমনি নিবাসগুলোতে পিতৃমাতৃহীন নবজাতক থেকে শুরু করে ছয় বছর পর্যন্ত শিশুদের লালন-পালন করা হয়।

এছাড়াও রয়েছে দুঃস্থ প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। এছাড়া বেসরকারি এতিমখানার শিশুদের ভরণপোষণের জন্য প্রতিটি এতিম শিশুর বিপরীতে সরকারি অনুদান দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২০
এমইউএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।