ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রুপার চেইন আর বিছার জন্য দেড় বছরের শিশুকে হত্যা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২০
রুপার চেইন আর বিছার জন্য দেড় বছরের শিশুকে হত্যা!

রাজশাহী: গলায় ছিল রুপার চেইন, কোমরে বিছা। সব মিলিয়ে হতে পারে দুই ভরি রুপা।

যার দাম বর্তমান বাজারে দুই হাজার টাকারও বেশি না। অথচ এই সামান্য রুপার চেইন ও কোমরের বিছার জন্য ১ বছর সাত মাস বয়সের এক শিশুকে নদীর পানিতে ডুবিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে! 

গত রোববার (৯ আগস্ট) রাজশাহীর চারঘাটে বড়াই নদীতে ভাসমান অবস্থায় ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিবেশী নারীকে গ্রেফতারের পর ওই শিশু হত্যার রহস্য উন্মোচন করে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) রাতে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতার আসামিরা হলো- রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার চকশিমুলিয়া গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৫) ও একই এলাকার মাদকাসক্ত ব্যক্তি আজাদ (৪০)। পারভীনকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেই এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মাদকাসক্ত আজাদকেও গ্রেফতার করা হয়।  
বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় পারভীনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম জানান, গত ৯ আগস্ট জেলার চারঘাট থানার কালুহাটি গ্রাম সংলগ্ন বড়াল নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক বছর সাত মাস বয়সী শিশু আজমাইন সারোয়ার আলিফের মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় শিশু আলিফের মা চম্পা বেগম বাদী হয়ে প্রতিবেশী পারভীন বেগমকে আসামি করে চারঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্তের নির্দেশ দেন- রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল্লাহ।

এরপর চারঘাট থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উন্মোচনে তদন্তে নামে। পরবর্তী সময়ে পারভীন বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে রিমান্ডে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পারভীন জানায়, তিনি ও একই গ্রামের মাদকাসক্ত আজাদকে সঙ্গে নিয়ে গত ৭ আগস্ট শিশু আলিফকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনানুযায়ী ৮ আগস্ট শিশুটিকে কোলে নিয়ে পারভীন তার বাড়ির সামনে রাস্তায় আসে এবং আগে থেকে অপেক্ষমাণ সহযোগী আসামি আজাদের কোলে দিয়ে দেয়।

মাদকাসক্ত আজাদ শিশুটিকে বড়াল নদীতে ফেলে দিয়ে আসে। তার আগে আলিফের শরীরে থাকা রুপার চেইন ও কোমরের বিছা নিয়ে নেয় এবং কথা মত পরে পারভীনকে দিয়ে দেয়। আর এই কাজের জন্য আজাদকে মাত্র ৩০০ টাকা দেয় পারভীন। তাকে নিয়ে পরে অভিযানে নেমে নিজ বসতবাড়ির ভেতর আঙিনার মাটিতে পোঁতা অবস্থায় আজমাইন সারোয়ার আলিফের রুপার চেইন ও কোমরের বিছা উদ্ধার করা হয়।

রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার পারভীন দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া আজাদকেও গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আজ রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার জবানবন্দিও গ্রহণ হতে পারে বলে জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

বাংলাদেশ সময়: ০৫০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
এসএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।