ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মাদকাসক্ত বড় ছেলেকে হত্যা করেন বাবা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মাদকাসক্ত বড় ছেলেকে হত্যা করেন বাবা! জামালপুর পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

জামালপুর: বড় ছেলে মাদকাসক্ত, তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ পুরো পরিবার। অত্যাচারের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে, ছোট ছেলেকে নিয়ে বড় ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বাবা।

 

গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে এমন স্বীকারোক্তিই দিয়েছেন হত্যার শিকার আল-আমিনের বাবা মো. আমিরুল ইসলাম ও ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম।  

এবারের ঈদুল আজহার পরের দিন জামালপুর সদরে অজ্ঞাতপরিচয় একটি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ছোট ছেলে ও সঙ্গে আরও দু’জনকে নিয়ে বড় ছেলেকে খুন করেন তার বাবা। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে জামালপুর পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জামালপুর এসপি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, গত ২ আগস্ট ঈদুল আজহার পরের দিন জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের পূর্ব পাড়দিঘুলী এলাকায় একটি কালভার্টের পাশে ভাসমান অবস্থায় মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহের ফিঙার প্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত হলে পরের দিন ৩ আগস্ট জামালপুর সদর হাসপাতাল মর্গে এসে তার বড় ছেলে আল-আমিন বলে নিশ্চিত করেন নিহতের বাবা। নিহত আল-আমিন শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার কাজীগলি গ্রামের মো. আমিরুল ইসলামের বড় ছেলে।

এরপর নিহতের বাবা ৫ আগস্ট বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হত্যার কারণ অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে জানা যায়, আল-আমিন মাদকাসক্ত ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১০ আগস্ট নিহতের ছোট ভাই আরিফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান- বড় ভাই আল-আমিন মাদকাসক্ত হওয়ায় তাকে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী গত ১ আগস্ট আগে থেকেই বাবা আমিরুল ইসলাম, নানা আক্তারুজ্জামান দুদু (৪৮) ও রুবেল মিয়া (২০) নামে এক ব্যক্তি জামালপুর সদরের ছোনটিয়া এলাকায় অবস্থান নেন। পরে বাবাকে বাড়ি নিয়ে আসার কথা বলে ছোট ভাই আরিফুল তার বড় ভাই আল-আমিনকে মোটরসাইকেলে করে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া বাবা ও অপর দু’জন আল-আমিনের হাত-পা বেঁধে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পাশের ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যান। আরিফুলের কাছ থেকে হত্যার স্বীকারোক্তি পাওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত জেলা সদরের নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা নানা আক্তারুজ্জামান দুদু ও কাষ্টসিংগা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল মিয়াকে ১১ আগস্ট তাদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার তিন জনেরই ঘটনার একই রকম বর্ণনায় জানা যায়- নিহতের বাবা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

এসপি আরও জানান, গ্রেফতার তিনজনকে আদালতে সোপর্দের পর তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বাবা মামলা দায়ের করলেও তিনি এখন আসামি হয়ে যাবেন। তাকে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।