ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কমেছে বংশী-তুরাগ-ধলেশ্বরীর পানি, বেড়েছে নদী ভাঙন

সাগর ফরাজী, সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
কমেছে বংশী-তুরাগ-ধলেশ্বরীর পানি, বেড়েছে নদী ভাঙন নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে ধলেশ্বরী পাড়ের অনেক পরিবার

সাভার (ঢাকা): বংশী, তুরাগ ও ধলেশ্বরী নদীর পানি গত কয়েক দিন ধরে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সাভারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির ফলে অনেক এলাকা থেকে এরই মধ্যে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে।

তলিয়ে যাওয়া রাস্তা-ঘাটও জেগেছে। এতে করে প্রায় ২০ দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় থাকা মানুষজনের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

নিম্নাঞ্চলের মানুষ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেও চরম বিপাকে পড়েছে ধলেশ্বরী নদী পাড়ের মানুষজন। বন্যার পানি কমলেও ভাঙনের কবলে পড়ে ফসলি জমিসহ ঘর-বাড়ি যাচ্ছে নদী গর্ভে।

সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের নলাগড়িয়া এলাকায় গত সাতদিনে প্রায় দশটি ঘরবাড়ি ধলেশ্বরী নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে বহু পরিবার ঘর-বাড়ি ভেঙে নিয়ে অন্যত্র যাচ্ছেন।

বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেলে নদী ভাঙন কবলিত ওই এলাকায় সরজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।

এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যদের বিষয়টি জানানো হলেও নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। তাই দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করার দাবি তাদের।

নলাগড়িয়া এলাকার বাসিন্দা বিল্লালের পিতৃপুরুষের ভিটেমাটি গত কয়েদিন আগে চলে গেছে নদীর গর্ভে। এখন প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।

বাংলানিউজকে বিল্লাল বলেন, প্রথমে বন্যা আসলো, বাড়ির ভেতর পানি উঠলে দুর্ভোগেই ছিলাম বন্যার কয়েকদিন। কিন্তু বন্যার পানি কমার সাথে সাথে নদী ভাঙা শুরু হলো, দুই দিনেই আমার বাড়িসহ আরও কয়েকটা বাড়ি ভেঙে নিয়ে গেলো। শেষে খুব কষ্ট করে ঘর ভেঙে আরেকজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

রাজ্জাক নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, জমি-বাড়ি চলে যাচ্ছে, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি, কিছুই করতে পারছি না। এত কষ্টের ভিটেবাড়ি নিমিষেই শেষ। পানি হয়ে গেলো বাড়ির সীমানা। আমরা এলাকাবাসী স্থানীয় প্রতিনিধিদের ভাঙনের বিষয়টি কয়েকবার জানিয়েছি। তবুও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

ভিটেমাটি ও কৃষি জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রাজ্জাক ও বিল্লালের মতো আরও অনেকেই।

ভাকুর্তা ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য মো. আব্দুর রশিদ বলেন, নদী ভাঙনে মানুষ ভিটেহারা হলেও এখনও তারা কোনো সহায়তা পাননি। চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে ভাকুর্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নদী ভাঙনের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে প্রশাসনের কাছ থেকে বরাদ্দ না আসায় ভাঙন প্রতিরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব নয়।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আরা নিপা বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে আমি বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।