রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় স্কুলছাত্র আরিফ হোসেনকে (১৯) নৃশংসভাবে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আর এ কারণে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করা যায়নি।
এতে পাওয়া গেছে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই স্কুলছাত্র আরিফকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তার হত্যার আলামত ধ্বংস করতেই হত্যার পর তার মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
স্কুলছাত্র আরিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে পিবিআই মিজানুর রহমান (৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়। এরপর হত্যার দায় শিকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মিজানুর।
গ্রেফতার মিজানুর রহমানের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার রুস্তমপুর ভারতীপাড়ায়। তিনি ইব্রাহিম আলীর ছেলে ও পেশায় ভ্যানচালক।
রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল মাহমুদ অভিযুক্ত গ্রেফতার মিজানুরের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
বুধবার (১২ আগস্ট) রাতে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) মিজানুরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর মিজানুর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে মিজানুর জানিয়েছেন, স্কুলছাত্র আরিফের সঙ্গে তার চাচা কুদ্দুসের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে আরিফকে হত্যা করা হয়। কুদ্দুস ছাড়াও হত্যাকাণ্ডের সময় মিলন ও মজনু নামে আরও দুইজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে শ্বাসরোধ করে আরিফকে হত্যা করা হয়। এরপর আলামত ধ্বংসের জন্য মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
আব্দুল মান্নান বলেন, কলেজছাত্র আরিফ হত্যাকাণ্ড একটি 'ক্লুলেস' ঘটনা। দীর্ঘ তদন্তে এ হত্যা মামলার কোনো 'ক্লু' পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে আসে। পরে তদন্ত নামে পিবিআই। এক পর্যায়ে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ভ্যানচালক মিজানুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শেষ পর্যন্ত তার কাছ থেকে এ হত্যারহস্য উন্মোচন হয়।
এর আগে গত বছরের (২০১৮ সালের) ১৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বাঘায় আগুনে পুড়িয়ে স্কুলছাত্র আরিফকে হত্যা করা হয়। আরিফ ওই উপজেলার রস্তমপুর ভারতিপাড়া গ্রামের মহির উদ্দীনের ছেলে। আরিফ হোসেন পাশের উপজেলা চারঘাটের পান্নাপাড়া ভোকেশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পরে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে বাঘা থানা পুলিশ। প্রতিবেশি আনোয়ার হোসেনের আম বাগানের পাশের খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
এর আগে ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রুস্তমপুর বাজারে গিয়ে আরিফ নিখোঁজ হয়। পরে রাতে আর বাড়িতে ফেরেনি। সবাই ধারণা করছিলেন, নানি অথবা বোনের বাড়িতে গেছে। কিন্তু পর দিন দুপুরে গ্রামের লোকজন মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। এ ঘটনায় আরিফের মা আছিয়া বেগম থানায় অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
এসএস/আরআইএস