ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বগুড়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, স্বামী আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
বগুড়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, স্বামী আটক পলাশ

বগুড়া: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টাকালে পলাশ (৩২) নামে এক পাষাণ্ড স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) আটক পলাশকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

 

এর আগে সোমবার (১০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের মাঝিবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের মাঝবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা পলাশের (৩৫) সঙ্গে একই গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে রহিমার (৩০) বিয়ে হয়। তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু অভাবের তাড়নায় তাদের সংসারে ঝগড়া লেগেই থাকতো। পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য রহিমা জীবিকার তাগিদে গত তিন বছর আগে সৌদি আরবে যান। সেখানে দুই বছর কাজ করে দেশে ফিরে আসেন। পরে স্বামীকে গরুর ব্যবসা করার জন্য টাকা দেন রহিমা। কিন্তু পলাশ ব্যবসা না করে সেই টাকা খরচ করে ফেলেন। এ নিয়ে শুরু হয় পারিবারিক কলহ। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা রহিমা স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী রহিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন পলাশ।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে রহিমার ছেলে বাড়ির বাইরে গেলে স্বামী পলাশ ঘরে ঢুকে দরজা-জানালা বন্ধ করে ধারালো ছুরি রহিমার গলায় ধরলে তিনি চিৎকার শুরু করেন। রহিমার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে বাড়ির চারপাশ ঘিরে রাখে এবং বাইরে থেকেই পলাশকে বিভিন্নভাবে বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পলাশ কারও কথা না শুনে স্থানীয় লোকজনকে চলে যেতে বলেন। এসময় পলাশ স্থানীয় লোকজনকে হুমকি দেন তোমরা চলে যাও, আমি রহিমাকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করবো।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয়রা ধুনট থানায় খবর দিলে উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পলাশকে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে। পলাশ রহিমার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে পুলিশসহ সবাইকে চলে যেতে বলেন।

এরপর ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বিষয়টি শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। বিষয়টি তিনি পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাকে জানালে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদকেও দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে বলেন। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেরপুর সার্কেল এবং ধুনট থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে পলাশের হাত থেকে রহিমাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। পরে পলাশের সঙ্গে বিভিন্নভাবে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখে পুলিশ কর্মকর্তারা। এ সময় ঘরের অন্যদিক দিয়ে সিঁধ কেটে ও দরজা ভেঙে পুলিশ ঘরে ঢুকে পলাশকে ছুরিসহ আটক করে। সেসঙ্গে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
কেইউএ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ