ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদের দশ দিন পরেও পিরোজপুরে গণপরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
ঈদের দশ দিন পরেও পিরোজপুরে গণপরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় গণপরিবহনে বেশি ভাড়া আদায়। ছবি: বাংলানিউজ

পিরোজপুর: ঈদুল আজহার পর ১০ দিন পার হয়ে গেলেও পিরোজপুরে কর্মমুখী মানুষের ভোগান্তি কমছে না। কর্মস্থলে ফিরতে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের।

আর দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত আসন। লঞ্চে সিট বা কেবিন আর বাসে আসন না পেয়ে অনেককে দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে দীর্ঘ পথ।  

মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) দুপুরে জেলার নাজিরপুর বাসস্ট্যান্ডে বসে কথা হয় উপজেলার শ্রীরামকাঠী গ্রামের ফিরোজুল ইসলামের সঙ্গে। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বিশাল আকৃতির দুটি ব্যাগসহ বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়ে আছেন ইমাদ পরিবহনের কাউন্টারের সামনে। যাচ্ছিলেন কর্মস্থল চট্টগ্রামের উদ্দেশে।  

তিনি জানান, জন প্রতি ৭শ টাকার টিকিট ১৬শ টাকা করে কাটতে হয়েছে। এতে তাকে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৬শ টাকা বেশি দিতে হয়েছে। তারপরও সিট পেয়েছেন ৪টির স্থলে ৩টি। দীর্ঘ পথ এসব লাগেজ নিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। তিনি জানান, ছুটি শেষ হয়েছে। কর্মস্থলে যোগ দিতেই শত কষ্ট করে হলেও যেতে হবে।

ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া জেলার সদর উপজেলার শংকর পাশা গ্রামের মিরাজুল ইসলাম ফকির জানান, স্বাভাবিক ভাড়া ৪শ টাকা করে নেওয়া হলেও সিন্ডিকেট করে সব পরিবহনের ভাড়া নিচ্ছে সাড়ে ৮শ টাকা করে। তারপরও সুবিধাজনক আসন পেতে আরো বেশি টাকা দিতে হচ্ছে।  

অতিরিক্ত এ ভাড়া আদায়ের কারণ জানতে চাইলে কাউন্টার পরিচালকরা জানান, বাস মালিক ও কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তারা এ ভাড়া নিচ্ছেন।  

বিকেলে জেলা সদর থেকে নৌপথে ঢাকাগামী লঞ্চ টার্মিনাল হুলার হাটে গিয়ে দেখা গেলো আরো ভয়াবহ আবস্থা। লঞ্চগুলো সিন্ডিকেট করে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে।  

রাজদূত লঞ্চের ঢাকাগামী কেবিন যাত্রী সিরাজুল ইসলাম জানান, সিঙ্গেল কেবিনে স্বাভাবিক নির্ধারিত ভাড়া ৯শ টাকা হলেও কেবিন পেতে ২ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। আর সিট সংগ্রহ করতে এক দালালকে আরো ২শ টাকা বকশিশ দিতে হয়েছে। এ অবস্থা লঞ্চের ডেকের (সাধারণ) যাত্রীদের জন্যেও। ২শ টাকার টিকিট নিচ্ছে ৭শ টাকা করে।  

এ সময় ঢাকাগামী রানীপুর গ্রামের দিনেশ বেপারী বলেন, অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য জরুরিভাবে ঢাকা যেতে হলেও কোনো কেবিন পাচ্ছি না। তাই অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ডেকে বসেই যেতে হচ্ছে।  

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, সব সময়ই ঈদের মৌসুমে ভাড়া স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি নেওয়া হয়। পরে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ভাড়া বেশি নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
 
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে জানান, কর্মমুখী যাত্রীরা যাতে হয়রানি না হয় সেজন্য বাস ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার এমন অভিযোগ জেলার নাজিরপুর, কাউখালী, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ ও ইন্দুরকানী থেকে ঢাকাগামী সব লঞ্চ ও বাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।