ধামরাই (ঢাকা): ঢাকার ধামরাইয়ের ফুকুটিয়া এলাকায় বন্যার পানিতে একটি সড়ক ভেঙে সড়কের উপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় যান চলাচল বিছিন্ন হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন আশপাশের এলাকাসহ কয়েক ইউনিয়নের মানুষ।
রোববার (৯ আগস্ট) বিকেলে ধামরাই-কালামপুর সড়কে ভাঙনের এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যার পানির তোড়ে সড়কে প্রায় চার ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের ভাঙনকবলিত অংশের এপার-ওপারে যাত্রীবাহী বিভিন্ন ছোটো পরিবহন (অটোরিকশা, ভ্যান, টেম্পু) দাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া স্থানীয়রা নিজেদের চলাচলের স্বার্থে প্রায় ৩০০ ফুট একটি বাশের সাঁকো তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে নৌকা করে মানুষ পারাপার হতেও দেখা গেছে।
এলাকাবাসী জানায়, গত ২৮ জুলাই ধামরাই-কালামপুর সড়ক ফুকুটিয়া এলাকায় বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়। পরে ৬ আগস্ট থেকে সড়কটিতে পুরোপুরি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সাধারণভাবে শুধু মানুষ পারাপারের জন্য একটি সাঁকো তৈরি করলেও সেটির অবস্থা নাজুক। যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে সাঁকোটি।
সড়কটি ভাঙায় দুর্ভোগে পড়েছে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ। আশাপাশে থাকা পোশাক শ্রমিকরাসহ দেপশাই, নওগাঁ, চাপিল, সোনার টেক, শৈলান ও গোয়ালদী এলাকার মানুষ। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছোট-ছোট দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, এই সড়কটি এই অঞ্চলের প্রধান সড়ক। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন এক লাখ মানুষ যাতায়াত করে থাকে। বন্যার কারণে সবজি ক্ষেতসহ সড়কের অনেক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি সড়কটি যেন দ্রুত মেরামত করা হয়। তাহলে পোশাক শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হবে।
সড়কটির পার্শ্ববর্তী ওডিসি ক্রাফ্ট নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক আকলিমা বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটি শেষে শনিবার (৮ আগস্ট) তাদের কারখানা চালু হয়েছে। কারখানায় সকালে যেতে ও ছুটি হলে ফেরার পথে সাঁকো দিয়ে যেতে হয়। সাঁকো থাকলেও পানিতে ভিজেই যাতায়াত করতে হয়। তাদের কারখানায় প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক আছেন, যাদের প্রতিদিন এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সড়কটিতে অটোরিকশা চালক বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যাত্রী পাওয়া যায় না। আগে ধামরাই থেকে কালামপুর যেতে পারতাম ভাড়াও বেশি পেতাম। কিন্তু এখন ঠিক মতো যাত্রীই পাই না। সড়কটি দ্রুত মেরামত করলে, সবার জন্যই ভালো হবে।
সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ চলাচলের জন্য আমরা আপাতত একটি বাঁশের সাঁকো দিয়েছি। পরবর্তীতে আরও ভালো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আজাহার আলী বাংলানিউজকে বলেন, সড়ক ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসী একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত ব্যবস্থা করেছেন। তবে এখন পানির প্রচুর স্রোত থাকায় আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। এখন সড়কে বস্তা বা মেরামতের ব্যবস্থা নিলে সেটাও টিকবে না। পানি কমলে সড়কটির মেরামত করা হবে।
ধামরাই উপজেলা প্রসাশন থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না? জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল হককে বেশ কয়েকবার তার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২০
এসআরএস