ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডিএনসিসির অভিযানে ৮৭ স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা, জরিমানা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২০
ডিএনসিসির অভিযানে ৮৭ স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা, জরিমানা ডিএনসিসি অভিযান।

ঢাকা: এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রথম দিনের অভিযানে ৮৭টি স্থাপনায় মিললো এডিস মশার লার্ভা।

এছাড়া জরিমানা করা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ৬শ টাকা।  

শনিবার (৮ আগস্ট) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ।

এতে বলা হয়, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী বছরব্যাপী মশকনিধন কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। এরই অংশ হিসেবে কয়েকটি পর্যায়ে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের (চিরুনি অভিযান) সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ৬-১৫ জুন প্রথম ও ৪-১৪ জুলাই দ্বিতীয় পর্যায়ের সফল চিরুনি অভিযান শেষে শনিবার থেকে তৃতীয় পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু হলো।

অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও জোরদার করা হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে ভবন বা স্থাপনার মালিক পাওয়া যাবে না, সেসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিয়মিত মামলা করা হবে।

এছাড়া তৃতীয় পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের প্রথম দিনে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হয়েছে। শনিবার মোট ১২ হাজার ৭৩৬টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৮৭ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৭ হাজার ৩০১ টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ সময় ২০টি মামলায় মোট ১ লাখ ২৮ হাজার ৬শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং অন্যান্য বাড়ি ও স্থাপনার মালিককে সতর্ক করা হয়েছে।  

উত্তরা অঞ্চল-১ এর অধীনে মোট ৭৯৮টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ৬টি মামলায় মোট ১৪ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৬৮৭ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

মিরপুর অঞ্চল-২ এর অধীনে মোট ২হাজার ৪১৭টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ২৩৫ টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাস্ক ব্যবহার না করার জন্য ৫টি মামলায় মোট ৬শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মহাখালী, অঞ্চল-৩ এর অধীনে মোট ১ হাজার ৬১৪ টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩৮টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৯৭৫ টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এসময়ে ৪টি মামলায় মোট ৯০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

মিরপুর-১০, অঞ্চল-৪ এর অধীনে মোট ১হাজার ৫২৬টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ২টি মামলায় মোট ১ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৬২৫টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।  

কারওয়ানবাজার, অঞ্চল-৫ এর অধীনে মোট ২ হাজার ১৬১টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১ হাজার ৬৪৪টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

হরিরামপুর, অঞ্চল-৬ এর অধীনে মোট ১হাজার ৩৯০টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১০ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১ হাজার ১৩৮টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

দক্ষিণখান অঞ্চল-৭ এর অধীনে মোট ৮৮৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৬৯৩ টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

উত্তরখান অঞ্চল-৮এর অধীনে মোট ৭৪৩টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ২টি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া  যায় এবং ৪৬৮ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

ভাটারা অঞ্চল-৯ এর অধীনে মোট ৪৯১টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৫ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এবং ২৮৯টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

সাঁতারকুল অঞ্চল-১০ এর অধীনে মোট ৭১০টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে কোনো এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। তবে এ সময়ে ৫০৭টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।

উল্লিখিত সব সম্ভাব্য এডিস মশার প্রজনস্থলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনার আগে কীটনাশক ছিটানো হয়েছে এবং জনসাধারণকে এ বিষয়ে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তৃতীয় ধাপে চিরুনি অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে এবারও প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। দীর্ঘমেয়াদি আধুনিক মশকনিধন ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে বিগতবারের ন্যায় এবারও এডিসের লার্ভা প্রাপ্তিরস্থানসমূহ এবং প্রজনন উপযোগী পরিবেশসমূহের তথ্য অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযানে মোট ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৬টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ হাজার ৬৮৬টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং সর্বমোট ৪৮ লাখ ১২ হাজার ৫১০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিলে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান (০৯ আগস্ট) রোববারও অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২০
এমএমআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।