বরিশাল: বরিশালের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোত থাকায় ভাঙনের শঙ্কা বেড়েছে নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে।
যদিও এরইমধ্যে বরিশাল সদর উপজেলার লামচরি, বাবুগঞ্জের রহমতপুর, মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদী ভাঙনে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশল বিভাগ বলছে, দক্ষিণাঞ্চলে যেমন নদ-নদীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ভাঙনের হারটাও একটু বেশি থাকে বর্ষার এ সময়টাতে। তবে এ মুহূর্তে বরিশাল জেলায় যেমন কোন ঝুঁকিপূর্ণ বাধ নেই, তেমনি কোন এলাকায় প্রবল ভাঙনও দেখা দেয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট সবশেষ হিসাব অনুযায়ী বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার, বাকেরগঞ্জের বুড়িশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার, আবুপুরের নয়াভাঙ্গুনি নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমা ১১৪ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার, মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার, আমতলীর বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার, বেতাগীর বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার, বামনার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার, উমেদপুরের কচা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পিরোজপুরের বলেশ্বর নদের পানি বিপৎসীমা ধরে অতিবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম বলেন, পূর্ণিমা ও উজানের পানির চাপের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। আর পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে সরাসরি মেঘনার সাথে সম্পৃক্ত নদীগুলোর পানি বেশি বেড়েছে, সেই হিসেবে বরিশালে গৌরনদী, উজিরপুর, বানারীপাড়া উপজেলার দিক থেকে বয়ে যাওয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পায়নি। আবার এদিকটাতে বরগুনা কিংবা পিরোজপুরের নদীগুলোর পানি তেমনভাবে বাড়েনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের বানারীপাড়া-উজিরপুরের সন্ধ্যা, মেহেন্দিগঞ্জের কালাবদর ও তেঁতুলিয়া এবং ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালী নদী তীরবর্তী এলাকায় কিছুটা ভাঙন দেখা দিয়েছে।
মেহেন্দিগঞ্জের বাসিন্দা মো. কালাম জানান, স্বাভাবিকের থেকে বর্তমানে মেহেন্দিগঞ্জের আশপাশের নদীতে পানি অনেক বেশি। বিশেষত নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মানুষজনের ঘরে পানি ঢুকে গেছে।
অপরদিকে বরিশালসহ দক্ষিণের জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। অতিমাত্রার বৃষ্টিতে বরিশাল নগরের নিম্নাঞ্চল ও বেশকিছু সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি নদীর পানি কানায় কানায় পূর্ণ থাকায় শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা খালগুলোও পানিতে পরিপূর্ণ। খালতীরবর্তী অনেক নিম্নাঞ্চলও সেই পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২০
এমএস/এমজেএফ