ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সিনহা রাশেদ: ন্যায় বিচার দাবি রাওয়ার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২০
সিনহা রাশেদ: ন্যায় বিচার দাবি রাওয়ার

ঢাকা: আগামী তিন মাসের মধ্যে দ্রুত আদালতের মাধ্যমে মেজর সিনহা হত্যার ন্যায় বিচার সম্পন্ন করা এবং দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)।

বুধবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৫ টায় রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়ার হেলমেট হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নুরুল আফসার।

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রাওয়া।

অন্য দাবিগুলো তুলে ধরে মেজর খন্দকার নুরুল আফসার বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সব আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠাতে হবে। তদন্ত চলাকালীন সময়ে যাদের নাম আসবে তাদেরও গ্রেফতার করতে হবে।

এছাড়া কক্সবাজারের এসপিকে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। এ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা, তথ্য গােপন করে মিডিয়াতে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া ও একমাত্র চাক্ষুস স্বাক্ষী সিফাতের বিরুদ্ধে দু'টি কাল্পনিক ও বানােয়াট মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।  

অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়, ওসি প্রদীপকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো। প্রত্যক্ষদোর্শী সিফাত ও ট্রাকড্রাইভারসহ সব সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুরূপ একটি ভিন্ন মন্ত্রণালয় (ভ্যাটারান মন্ত্রণালয়) গঠন করে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিরাপদ ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জীবনযাপনে সার্বিক সহায়তা নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী, সরকার প্রধান ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, তিনি সার্বিক বিষয়গুলো অবহিত আছেন এবং যথাযথ দিকনির্দেশনা দিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার সম্পন্ন করে সব সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন।

আরও বলা হয়, আমাদের আমৃত্যু সম্মান ও সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চিত করার দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। সব সাক্ষীদের দীর্ঘ মেয়াদী সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সাক্ষীদের পরিচিত বা আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমেও যেনো কোনো চাপ সৃষ্টি না করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া কালক্ষেপণ না করে এ মামলার দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে অভিযােগপত্র দাখিল করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান মােতাবেক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসাবে গড়ে তােলার জন্য জবাবদিহিমূলক আইন প্রণয়ন করে, সেই অনুযায়ী বাহিনীকে পুনর্গঠিত করা। রাষ্ট্রের সব অস্ত্রধারী বাহিনীকে অবশ্যই সংবিধান মােতাবেক সুশৃঙ্খল হওয়া বাধ্যতামূলক। কোনোভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে যেনো কোনো রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়িত না হয়। সেদিকে সবার সদয় দৃষ্টি কামনা।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নুরুল আফসার বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হলে প্রয়োজনে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো।

সিনহা সামরিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত অবস্থায় তিনি সামরিক পোশাক পড়তে পারেন কি না? জানতে চাইলে রাওয়া অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নুরুল আফসার বলেন, সিনহা হান্টিং ড্রেস ও বুট (সামরিক পোশাকের মতো দেখতে) পড়া ছিলেন। একটা ছোপ ছোপ গেঞ্জি ও ধূসর রংয়ের প্যান্ট পরা ছিলেন। তবে আপনারা হান্টিং ড্রেস ও হান্টিং বুটকে সামরিক পোশাক বলে চিহ্নিত করে ফেলবেন এটা তো মানা যাবে না। সিনহা রামু ডিভিশনে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন। তিনি একজন অ্যাডভেঞ্চার প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। যার সম্পর্কে কথা বলবেন, আগে তার সম্পর্কে হিস্ট্রি জানতে হবে।

ওই এলাকায় যাওয়ার বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করার দরকার ছিলো কি না? জবাবে তিনি বলেন, মেরিন ড্রাইভ রোড়ে যে কেউ গেলেই তাকে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে? একজন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যকে এভাবে গুলি করে মেরে ফেলা এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একজন এসএসএফ সদস্য ৫ সেকেন্ডে ৮টি গুলি করার ক্ষমতা রাখে। এ কোয়ালিটি না তাকলে এসএসএফে কেউ কাজ করতে পারেন না এবং সবগুলো নির্দিষ্ট পয়েন্টে করতে সক্ষম। এটা পুলিশ বা আর্মির বিষয় না। একজন নাগরিক হিসেবে যে কেউ সেখানে গেলে তাকে গুলি করতে হবে কেন? যদি কোনো অপরাধীও হয় তবে দেশে আইন আছে, আইনানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, পুলিশ বলছে, তার কাছে ২২টি ইয়াবা পাওয়া গেছে। এটা সম্পূর্ণ হাস্যকর ব্যাপার। আর চেকপোস্টে মেজর সিনহা তার পরিচয় দিয়েছে। সে একজন আইডেন্টিফাইড লোক। সেখানে মেজর সিনহা এরকম কোনো অপরাধ করেনি যে, তাকে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে।

আমরা চাই সুষ্টু তদন্তের জন্য মেজর সিনহা হত্যা মামলাটি র‌্যাবে তদন্ত করুক। তদন্তে সব সত্য তুলে ধরার জন্য আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।

গত শুক্রবার টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ। একে সরাসরি হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছেন সিনহার স্বজনরা। এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচারের দাবি করেছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২০
এসজেএ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।