মানিকগঞ্জ: ভারী বর্ষণে পদ্মা-যমুনা নদীর পানি বাড়ায় মানিকগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে শিবালয়, দৌলতপুর, ঘিওর, হরিরামপুর, সাটুরিয়া ও জেলা সদর উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।
বুধবার (৫ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগস্ট মাসের শুরু থেকেই পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে মানিকগঞ্জ জেলাবাসীর মনে স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে এখনও দুর্ভোগ কমেনি। অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষের বসতবাড়ি এখনও পানির নিচে ডুবে আছে। ফলে তারা দূরের আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তা-ঘাট ভেঙে গেছে।
হরিরামপুরের বাল্লা এলাকার বাসিন্দা মজনু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাড়িতে কোমর পর্যন্ত পানি উঠেছিলো। এখন পানি নামতে শুরু করেছে। পানি নামলেও রাস্তায় এখনও হাঁটুপানি রয়েছে। ফলে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এলাকারবাসীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বন্যার পানি মাড়িয়ে বাজারের আসতে হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ও ঠাণ্ডাজনিত রোগ।
দৌলতপুরের চরকাটারির আলফাজ বাংলানিউজকে বলেন, এখনও বাড়ি থেকে পানি নামেনি। শুনেছি যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে। এখন তো আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। এলাকায় বন্যার পানি কমলেই বাড়ি যাবো।
যমুনার আরিচা পয়েন্টের পানির স্তর পরিমাপক ফারুক আহাম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি দুই সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা হচ্ছে ৯ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার ।
মানিকগঞ্জ প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, জেলার ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত। তলিয়ে গেছে জেলার ৩১ হাজার ৫৭৭ হেক্টর কৃষি জমির ফসল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬৯ হাজার ৩৭৭টি পরিবারের লাখো মানুষ । বন্যাকবলিত মানুষদের মধ্যে চাল, শুকনা খাবার, শিশু খাবার, গো-খাদ্যসহ নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে।
বন্যাকবলিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। যখন যা প্রয়োজন তা তাদের মধ্যে সরবারহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া ৫২টি কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২০
এএটি