ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৯৯৯-এ ফোন, শিক্ষার্র্থীসহ ৫০ জন উদ্ধার করল পুলিশ

স্টাফ ও ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২০
৯৯৯-এ ফোন, শিক্ষার্র্থীসহ ৫০ জন উদ্ধার করল পুলিশ উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীরা। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: আনন্দ ভ্রমণে বেরিয়ে নৌকার ঈঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝ যমুনায় আটকে পড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ৫০ জন। নদীর স্রোতে ভাসতে ভাসতে একপর্যায়ে অজানা এক চরে আটকে যায় তাদের নৌকা।

কোনো উপায় না পেয়ে একজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চান। সে অনুযায়ী নৌ পুলিশের একাধিক টিমের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় ভোর রাতে উদ্ধার করা হয় তাদের।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) ভোরে বিপদগ্রস্ত ওই ৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়।

নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরিদা পারভীন জানান, গভীর রাতে চারদিকে সুনসান নীরবতা, আকাশে মেঘ। এর মধ্যে ৯৯৯ থেকে একজন ফোন দিয়ে জানতে চাইলেন-‘এটা কি বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড়? কিছু যুবক পথ হারিয়ে ফেলেছে তাদের উদ্ধার করতে হবে। ’ পুলিশ পরিদর্শক এম এ মান্নান জানালেন ‘এটা সেতুর পূর্ব পাড়, পশ্চিমে যিনি কাজ করছেন তার ফোন নম্বর দিচ্ছি। ’ ৯৯৯ থেকে ফোন দেওয়া ওই নারী পুলিশ সদস্য জানালেন ‘স্যার যদি সম্ভব হয় আপনি এখনি উদ্ধার কর্যক্রম শুরু করে দিন। তারা আতঙ্কিত এবং ভয় পাচ্ছে' এরপর থেকে একযোগে শুরু হয় নৌ পুলিশের তৎপরতা।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিক্ষাথীরা অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছে ফলে বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়া প্রায় বন্ধ। তাই আনন্দ উদযাপনের জন্য একদল বালক ও যুবক নৌকা ভ্রমণের পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী সোমবার (৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় পিকনিক করার উদ্দেশে তারা নৌভ্রমণে বের হন, গন্তব্য বঙ্গবন্ধু সেতু।

সারাদিন নদী ভ্রমণের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নাগরপুরে ফেরার পথে নৌকাটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। মাঝি নৌকার ইঞ্জিন মেরামতের শত চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। নদীর তীব্র স্রোতের কারণে নৌকাটি ভাসতে ভাসতে যমুনা সেতু থেকে প্রায় ২২ থেকে ২৫ কিলোমিটার ভাটিতে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানাধীন নদীর মাঝে ছোট্ট একটা চরে আটকা যায়।

তাদের একজন বুদ্ধি করে ৯৯৯-এ ফোন করে উদ্ধার পেতে সাহায্য কামনা করে। তারপর নৌপুলিশের চৌহালী নৌপুলিশ স্টেশন, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব নৌপুলিশ স্টেশন, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম নৌপুলিশ স্টেশন, সিরাজগঞ্জ নৌপুলিশ স্টেশন তৎপর হয়ে ওঠে। ক্রমাগত ফোনে যোগাযোগ করে এবং নির্দেশনা দিতে থাকে নৌ পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে যাত্রীসহ নৌকার অবস্থান খুঁজে বের করে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব নৌ পুলিশ স্টেশন।

নৌ পুলিশের পরিদর্শক মান্নান বুদ্ধি করে ভুক্তভোগীদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার নিয়ে যান। নৌ পুলিশের কর্ম তৎপরতা ও আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আটকে পড়া ৫০ জন। ততক্ষণে রাত পেরিয়ে ভোর চারটা। এরপর টেকনিশিয়ানকে ডেকে নৌকা মেরামত করে ভুক্তভোগীদের বাড়ি পাঠায় নৌপুলিশ। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ না করতে পরামর্শ দেওয়া হয় তাদের।

নৌকায় অবস্থানরত একজন টাঙ্গাইলের নাগরপুরের স্থানীয় কলেজে ১ম বর্ষের পড়াশোনা করে। ১৩ জন বালক দৌলতপুর পিএস হাইস্কুল এবং ৩ জন বালক মাইঝালি বাজার প্রাইমারি স্কুলে পড়া লেখা করে। এছাড়া, রয়েছে মাতিলাল ডিগ্রি কলেজের ১৬ জন ছাত্রসহ সঙ্গে ছিলো বাদ্যযন্ত্র বাজানোর টেকনিশিয়ান এবং নৌকার মাঝি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২০
পিএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।