ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাগেরহাটে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২০
বাগেরহাটে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীমের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।

জোরপূর্বক বালু ভরাট ও ভবন নির্মাণের এক পর্যায়ে জমির মালিক দাবিদার মো. জাহিদুল ইসলাম তাপসের অভিযোগে সোমবার (০৩ আগস্ট) চিলতমারী থানা পুলিশ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

চিতলমারী উপজেলার কিসমত পিপড়াডাঙ্গা মৌজার কালিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ৬০ শতক জমি নিয়ে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।  

অভিযোগকারী মো. জাহিদুল ইসলাম তাপস বলেন, ১৯৫৫ সাল থেকে আমার দাদা নাজিম উদ্দিন শেখ কিসমত পিপড়াডাঙ্গা মৌজার কালিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন তিনটি স্থানের মোট ৬০ শতক জমি ভোগ-দখল করেন। দাদার মৃত্যুর পরে আমার পিতা আবুবকর শেখ ও চাচাগণ এই জমি যথারীতি ভোগ দখল করা শুরু করেন। কিন্তু ২০১৬ সালে হঠাৎ করে চিতলমারী উপজেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীম আমাদের জমির ওপর বালু ফেলা শুরু করেন। আমরা বাধা দিলে বলেন, কয়েকদিনের জন্য বালুগুলো থাকুক, পরে আবার নিয়ে যাব। কিন্তু তিনি বালু তো নেননি, বরং আমাদের জমি দখলের পাঁয়তারা শুরু করেন। পরবর্তীতে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত ওই জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন।  

কিন্তু দখলবাজ মুজিবুর রহমান শামীম রাতের আধারে তার লোকজন নিয়ে জমিতে ঘর নির্মাণে উদ্ধত হয়। আমরা বাধা দিলে মারপিটের ভয় দেখায়। চেয়ারম্যানের কাছে গেলে বলেন, জমি তোমাদের, জমির কাগজ তোমাদের কিন্তু জমি তোমরা খেতে পারবে না। জমি ভোগ-দখল করব আমি। এক পর্যায়ে এসে ওই জমিতে আবারও ঘর নির্মাণ শুরু করেন চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন। পরে আমরা থানায় জানালে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। তার কাগজপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে বলেন।

অভিযোগকারী মো. জাহিদুল ইসলাম তাপসের ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীম শুধু আমাদের জমি নয়, স্থানীয় অনেকের জমি জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করছেন। অনেকের জমি দখলের জন্য হুমকি-ধামকিও দিচ্ছেন। পৈত্রিক সম্পত্তি সুষ্ঠভাবে ভোগ দখল করার জন্য বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

স্থানীয় আব্দুস সোবহান বালী বলেন, আমি একজন হতদরিদ্র মানুষ। চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীম জোর করে আমার ২২ শতক জমি ভোগ-দখল করছেন। আমি কোথাও গিয়ে বিচার পাচ্ছি না। দেলোয়ারের জমিও দখল নিয়েছেন মুজিবুর রহমান শামীম।

ভ্যান চালক মো. ফারুক শেখ বলেন, ১৯৯৭ সাল থেকে বাজার সংলগ্ন ২৭ শতক জমিতে বাড়ি করে বসবাস করে আসছি। কিন্তু গেলো বছর একটি রান্নাঘর তৈরি করতে গেলে চেয়ারম্যানের লোকেরা বাধা দেয়। বলে এই জমি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীমের। পরে আমি আর রান্নাঘর তৈরি করতে পারিনি। যেখানে যাই কেউ তার ওপরে কথা বলে না।

চিতলমারী থানার এসআই সঞ্জয় দে বলেন, মো. জাহিদুল ইসলাম তাপসের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিবাদপূর্ণ ওই জমিতে আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। ৮ আগস্ট দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করব।  

এসব বিষয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শামীমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিউজ করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। জমির ব্যাপারে আমি কোন কথা বলব না।

বাংলাদেশ  সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ০৩ আগস্ট, ২০২০
এস.এস শোহান/ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।