রাজশাহী: রাজশাহীর বাগমারায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রবাসী স্বামীকে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা আত্মসাতের জন্য স্ত্রী এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
সোমবার (৩ আগস্ট) দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে রোববার (২ আগস্ট) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই বিদেশফেরত ব্যক্তির নাম শাহাদত হোসেন (৪৮)। তিনি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ বকশের ছেলে ও ইরাক প্রবাসী।
এ ঘটনায় বাগমারা থানা পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছে। এছাড়া অদৃশ্য কারণে হত্যার অভিযোগ আমলে না নিয়ে ইউডি মামলা করেছে। যদিও পুলিশের দাবি তার স্ত্রীকে আটকই করা হয়নি। তাই ছেড়ে দেওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না। এ ঘটনার পর তাকে কেবল প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও প্রতিবেশীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইরাকে ছিলেন শাহাদত। গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে ফিরে তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এসময় বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব নিয়ে স্ত্রী আঙ্গুরি বেগমের (৩৬) সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে চলে যান। ঈদের দু’দিন আগে তাকে বাড়িতে আবারও ফিরিয়ে আনা হয়।
নিহত শাহাদতের ভাইদের অভিযোগ, রোববার দিনগত রাতে স্ত্রী আঙ্গুরি খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাওয়ান। এর কিছুক্ষণ পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে বাড়িতেই মারা যান। পরে পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত প্রবাসীর স্বজনদের অভিযোগ, বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা আত্মসাতের জন্য আঙ্গুরি তার স্বামীকে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ আঙ্গুরিকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। পরে তার ছেলে আনোয়ার হোসেনকে (১৫) থানায় ডেকে এনে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা গ্রহণ করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। তাদের অভিযোগ পুলিশ হত্যার অভিযোগ প্রথমে আমলে নিলেও পরে অদৃশ্য কারণে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে ইউডি মামলা করেছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তির স্বজনরা হত্যার অভিযোগ করছেন। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে শাহাদত গ্যাস্ট্রিকেই মারা গেছেন। মারা যাওয়ার আগেই তিনি পেন্টনিক্স ট্যাবলেট ও কারমিনা সিরাপ খেয়েছেন। তার স্ত্রীই এমনটাই দাবি করছেন। তাই আপতত ইউডি মামলা করে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
তবে মৃতের ময়নাদন্তের প্রতিবেদনে অন্য কিছু এলে পরে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বাগমারা থানার এ পুলিশ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২০
এসএস/আরবি/