ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আড়াই লাখ টাকার ‘ভোলা দা'র সঙ্গে ছাগল ফ্রি 

206 | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
আড়াই লাখ টাকার ‘ভোলা দা'র সঙ্গে ছাগল ফ্রি 

লালমনিরহাট: প্রায় সাড়ে ৮ মণ ওজনের ভোলা দা'র দাম হাঁকছেন আড়াই লাখ টাকা। ভোলা দা'র সঙ্গে ক্রেতাকে ফ্রিতে একটি ছাগল দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন খামারি আবুল বাশার বাদশা।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবুল বাশার বাদশা সন্তানের মতই যত্ন করে বড় করেছেন গরুটিকে। বাড়ির পোষা গাভির জন্ম দেওয়া এ গরুর নাম রেখেছেন 'ভোলা দা'।

ভোলা দা বলে ডাকলে সাড়া দেয় গরুটি। মালিকের অনুমতি ছাড়া খাদ্য গ্রহণ করে না ভোলা দা। অপরিচিত কোনো ব্যক্তি তার সামনে এলে তাড়া করলেও মালিক সামনে থাকলে শান্ত থাকে। মালিকের সামনে তার পিঠে উঠলেও কোনো বাধা নেই।  

খামারি বাদশা রাতে বাড়ি ফিরলে গেট খুলতে দেরি হলে ভোলা দা চিৎকার করে বাড়ির লোকজনকে জানান দেন তার মুনিব এসে গেটে অপেক্ষা করছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ভোলার খাবার তৈরি করে স্কুলে যান আবুল বাশার। ফিরে এসে ভোলা দা'র পরিচর্যা করেন।

ভোলা দা'র মালিক আবুল বাশার বাদশা বাংলানিউজকে জানান, বাড়ির পালিত একটি গাভির বাচ্চা ভোলা দা। জন্মের পর  থেকেই তাকে ভোলা দা বলে ডাকেন বাড়ির সবাই। ডাকে সাড়াও দেয় সে। এক বছর বাড়ির অন্য গরুর সঙ্গে থাকলেও গত দেড় বছর ধরে ভোলা দা'কে আলাদা ঘরে রেখে পরম যত্নে বড় করছেন খামারি বাদশা। ভোলা দা'র খাবার, গোসল ও বিশ্রাম সব কিছু নিয়মানুযায়ী করা হয়। সময়ের একটু এপাশ-ওপাশ হলেই চিৎকার শুরু করে। গরম ও অন্ধকার তার কাছে অসহনীয়। তাই ভোলা দা'র জন্য রয়েছে সৌর পাখা ও বাতি। প্রতিদিন সকালেই গোসল হয় তার। সকাল দুপুর ও রাত তিন বেলা খাবার দিতে হয় ভোলা দা'কে। এসব গরু আদর ভালবাসা বেশি পছন্দ করে, যোগ করেন মালিক আবুল বাশার।

ভোলা দা'র খাদ্য তালিকায় রয়েছে দৈনিক ২টি কলা, এক কেজি ভুষি, এক কেজি ধানের গুড়া, কাঁচা ঘাষ ও খড়সহ পরিমিত পানি। কোনো ধরনের  ইনজেকশন ছাড়াই প্রাকৃতিক ভাবেই বেড়ে ওঠা ভোলা দা অপরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করে না। তার ঘর সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। আড়াই বছরে প্রায় লাখ টাকার খাদ্য গ্রহণ করে প্রায় সাড়ে ৮ মণ ওজন হয়েছে ভোলা দা'র। জেলার প্রায় সব খামারের গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিলেও ভোলা দা রয়েছে সংক্রমণমুক্ত।  

করোনাকালিন দুর্যোগে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরু পালনে খামারিদের খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। অপরদিকে করোনা দুর্যোগে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের আনাগোনাও কমেছে। ফলে গরুর ন্যায্য মূল্য নিয়েও শঙ্কিত গরুর মালিকরা। আসন্ন ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে দেশের বড় বড় পশুর হাটের বেপারীরা লালমনিরহাটের খামারিদের বড় বড় গরু ক্রয় করে নিয়ে যান। কিন্তু চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারে বাইরের বেপারীদের আনাগোনা নেই বললেই চলে। তাই ভোলা দা'কে নিয়েও চিন্তিত মালিক আবুল বাশার বাদশা।

ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে ভোলা দা'র সঙ্গে বাড়ির পালিত প্রায় ১০/১২ হাজার টাকা মূল্যের একটি খাসি ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আবুল বাশার। ভোলা দা'র দাম হাঁকিয়েছেন আড়াই লাখ টাকা। এ পর্যন্ত এক লাখ ৮০ হাজার দাম উঠেছে। তবে দুই লাখ ২০ হাজারের উপরে বিক্রির ইচ্ছা বাশারের। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আদরের ভোলা দা'কে ঘরে রাখার আশায়  স্থানীয় ক্রেতা খুঁজছেন আবুল বাশার।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।