এছাড়া, ২০টি বাড়ি, ১২০টি ফ্ল্যাট, ২৫ কাঠা জমিসহ বিপুল পরিরিমাণ সম্পদের মালিক এ দুই ভাই। তবে তাদের বেশিরভাগ সম্পদই দেশে।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ।
এনু-রুপনের উত্থাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্যাসিনো ব্রাদার এনু-রুপনের উত্থাপন পারিবারিকভাবে। তাদের বাবা জুয়ারি ছিলেন। রাজধানীর সদরঘাটে তাদের জুয়ার আড্ডা ছিল। সেখানেই এনু-রুপনের পেশাদারি জুয়া কার্যক্রমের শুরু। ২০১৫ সাল থেকে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সেক্রেটারি জয় গোপালের হাত ধরেই তাদের ক্যাসিনো ব্যবসার উত্থান হয়।
এনু-রুপনের সম্পদের হিসাব জানতে চাইলে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ঢাকা ও এর আশাপাশে জমিসহ ২০টি বাড়ি, ১২৮টি ফ্ল্যাট, ২৫ কাঠা জমির মালিক তারা। তাদের ৯১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থিতিশীল টাকার পরিমাণ ১৯ কোটি টাকা হলেও তারা লেনদেন করেছেন ২০০ কোটি টাকারও বেশি।
এ দুই ভাই যত সম্পদ গড়েছেন তা সবই ক্যাসিনো থেকে এবং ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যেই। তাদের আরও সম্পদের তথ্য খোঁজ করতে দেশের বিভিন্ন জেলাতে অনুসন্ধান চলছে বলেও জানান ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ।
সম্প্রতি জয় গোপালের গ্রেফতারের বিষয়ে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার তথ্য আসার পর গত ৯ মাস আগেই আত্মগোপনে যান ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সেক্রেটারি জয় গোপাল। সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশা করছি জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব।
এনু-রুপনের বিরুদ্ধে চলমান চারটি মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত শেষে এক সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ডিআইজি বলেন, আমরা এনু-রুপনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মানি লন্ডারিংয়ের মামলা তদন্ত করছি। গেন্ডারিয়া থানার মামলায় ১৬ জন, সুত্রাপুরের দুটি মামলায় ১৫ ও ১০ জন এবং ওয়ারির মামলায় ১১ জনের বিরুদ্ধে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। তবে আনুষঙ্গিক বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলবে। তদন্তে নতুন জড়িত কারো নাম আসলে তাদের বিরুদ্ধে সিআইডি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে।
এনু-রুপনের ক্যাসিনো থেকে প্রতি রাতে কী পরিমাণ আয় হতো জানতে চাইলে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, প্রতি রাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হতো। দেশের বাইরে তাদের সম্পদ পাচার করেছেন কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে যেটা মনে হয়েছে, ক্যাসিনোতে অর্জিত অর্থ তারা বাড়ি, ফ্ল্যাট, অলঙ্কারের পেছনে ব্যয় করেছেন।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুত্রাপুর ও গেণ্ডারিয়া থানায় তাদের নামে ছয়টি মামলা হয়।
পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা, ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি সোনা জব্দ করে র্যাব। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২০
পিএম/এমজেএফ