ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্যাকবলিত একটি মানুষও খাদ্য কষ্টে থাকবে না: প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২০
বন্যাকবলিত একটি মানুষও খাদ্য কষ্টে থাকবে না: প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১৭ জেলার সাড়ে ১৪ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে আরও প্রায় তিন লাখ মানুষ। বন্যাদুর্গতদের জন্য সরকারের পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী প্রস্তুত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজনের জন্য রুটিসহ রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সচিবালয় থেকে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
 
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছে সর্বোচ্চ ২৩টি জেলা বন্যাকবলিত হবে।


 
‘ইতোমধ্যে ১৭টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। মোট বন্যা আক্রান্ত ইউনিয়নের সংখ্যা ৪৬৪টি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৯ জন এবং মোট পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৯৪ হাজার। ’
 
বন্যাকবলিত ১২টি জেলায় এক হাজার ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এসব কেন্দ্রে ২০ হাজার ১০ জন ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে।
 
প্রতিমন্ত্রী জানান, বন্যামোকাবিলার জন্য এ পর্যন্ত ২৩টি জেলায় ৮ হাজার ২১০ মেট্রিকটন চাল, ২ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭০ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট, গবাদি পশুর খাদ্যের জন্য ৪৮ লাখ টাকা ও ৪৮ লাখ টাকা শিশুখাদ্যের জন্য বিতরণ করেছি। এছাড়া ৩০০ বান্ডিল টিন ও ৯ লাখ টাকা গৃহ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিয়েছি।
 
‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন- খাদ্য তৈরি করে বিশেষ করে রুটি এবং রুটির সঙ্গে অন্য খাবার তৈরি করে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা এবং স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কাজটি করতে বলেছেন। সেজন্য বেশি বন্যাকবলিত ১২ জেলায় ৫ লাখ করে আরো ৬০ লাখ টাকা আজ বরাদ্দ দিয়েছি। ’
 
প্রতিমন্ত্রী জানান, আমরা প্রত্যেক জেলায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করেছি। মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও প্রত্যেক জেলায় মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। আমরা মনিটরিং করছি।
 
‘তাদের কাছে নির্দেশনা রয়েছে, যেখানেই ত্রাণের প্রয়োজন পড়বে, তারা যেন আমাদের মেইল করেন। মেইল করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বরাদ্দ দিয়ে দেবো। ’
 
এনামুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে আমরা যে বরাদ্দ দিয়েছি আশা করি যে অন্তত কয়েকদিন চলবে। তারপরও আমরা প্রস্তুত আছি, আমাদের পর্যাপ্ত মজুত আছে। আমরা সার্বক্ষণিক বন্যাকবলিত অসহায় ভাইবোনদের পাশে দাঁড়াতে পারবো। কোনো অবস্থাতেই বন্যাকবলিত একটি মানুষও খাদ্যকষ্টে থাকবে না। এটাই আমাদের ত্রাণ বিতরণের মূল এজেন্ডা।
 
ঢাকাসহ ১৪ জেলায় অবনতি হবে
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য দিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানির সমতল বাড়ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
 
আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি আরিচা পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।
 
অপরদিকে, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, নওগাঁ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
এছাড়া, কুশিয়ারা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকার নদীর পানি কমছে এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টা কমবে। বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে।
 
আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কমতে পারে। আর আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাট, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও রংপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে।
 
১০১টি পর্যবেক্ষণাধীন স্টেশনের মধ্যে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ২৩টিতে। বেড়েছে ৬৪টি এবং কমেছে ৩৪টি, অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টিতে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২০
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।