সোমবার (১৩ জুলাই) থেকেই নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে মাঠে নেমেছে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকাল ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
তবে নির্বাচনে করোনা ও বন্যার অজুহাত তুলে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ভোট বর্জন করায় লড়াই হবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহীন চাকলাদার ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের মধ্যে।
যশোর জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্র মতে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত থাকছে। নির্বাচনী এলাকায় দু’জন জুডিশিয়াল ও ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ১৮টি মোবাইল টিম ও ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষনিক কাজ করবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হবে। এছাড়া ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের জন্য অবশ্য প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যানারসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা রেখেছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভোট দিয়েই দ্রুত স্থান ত্যাগ করার।
এদিকে, ভোটের দিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীন চাকলাদার নিজ উদ্যোগে মোট ১ লাখ ৯০ হাজার ৬শ ৯০ ভোটারের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করবেন। সেইসঙ্গে ভোটার ও ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের জন্য উন্নতমানের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করেছেন।
যশোর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশাকরি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বাংলানিউজকে বলেন, ভোটের প্রচারণায় আমরা জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার যে ওয়াদা করেছিলাম, তা নির্বাচিত হওয়ার আগেই বাস্তবে রূপ পাচ্ছে। করোনা মোকাবেলায় নেতা-কর্মীদের জনসমাগম এড়াতে কিছুটা গোপনে হলেও প্রায়ই শাহীন চাকলাদার কেশবপুরে যাতায়াত অব্যাহত রেখেছিলেন। স্থগিত হওয়া নির্বাচন আবার তফসিল ঘোষণার পরেই এখানে এসে দলীয় নেতাদের সঙ্গে জরুরি মিটিং করে জনগণের বিপদে করণীয় এবং ভোটের প্রচরণা শেষ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মূলত এই আসনটি আওয়ামী লীগের। বিগত সাতটি জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তবে উপ-নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মাঠে নেমেছিলেন। এরমধ্যে করোনার কারণে ভোট স্থগিত হলে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করেন। তিনি আর ফেরেননি। করোনা প্রাদুর্ভাবে জনগণের এই বিপদেও পাশে আসেননি, একটা মাস্ক পর্যন্ত দেননি। এতে জনগণ ক্ষিপ্ত ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে ফের ভোট গ্রহণের দিনক্ষণ নির্ধারণ করলে জনরোষ এড়াতে করোনা অজুহাতে বিএনপি ভোট বর্জন করে। তবে বাস্তবে, মাঠে আসার মতো তাদের কোন পরিস্থিতি নেই। তাদের দলের মধ্যেও একাধিক গ্রুপ। বিএনপি প্রার্থীকে হারাতে তাদের দলের মধ্যেই রয়েছে একাধিক গ্রুপ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সংসদ সদস্য ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য ঘোষণার পর বিজ্ঞপ্তি জারি করে উপ-নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ২৯ মার্চ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও তার এক সপ্তাহ আগে করোনার কারণে ২২ মার্চ ওই নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। তফশিল অনুযায়ী ২৭ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, বিএনপির আবুল হোসেন আজাদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে বিএনপির দলীয় সিন্ধান্ত অনুযারী ৫ জুলাই ভোট বর্জন করেন আবুল হোসেন আজাদ।
এ নির্বাচনী এলাকায় মোট ১ লাখ ৯০ হাজার ৬শ’ ৯০ ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে পুরুষ ৯৫ হাজার ৫শ’ জন এবং ৯৫ হাজার ১শ’ ৯০ জন মহিলা ভোটার। আর ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে রয়েছে ৩শ’ ৭৪টি ভোটকক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
ইউজি/এমআরএ