ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসছে বর্জ্য, মারা যাচ্ছে কচ্ছপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসছে বর্জ্য, মারা যাচ্ছে কচ্ছপ

কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হঠাৎ করে ভেসে আসছে অসংখ্য বর্জ্য। কলাতলী সায়মন পয়েন্ট থেকে দরিয়া নগর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পয়েন্ট সয়লাব হয়ে গেছে এসব বর্জ্যে। 

প্লাস্টিকের ঝুঁড়ি, প্লাস্টিক ও কাঁচের বোতল, ছোট ছোট পরিত্যক্ত ড্রাম, দড়ি, নসাইলনের জালসহ এসব বর্জ্যে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে সামুদ্রিক কচ্ছপসহ প্রাণী।

তবে পরিবেশবাদের ধারনা করছেন, মানুষের ফেলা এসব বর্জ্য দীর্ঘদিন সমুদ্রের তলদেশে জমা ছিল।

হয়তো ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ঢেউয়ের আঘাতে এসব এখন ভেসে উপরে ওঠে যাচ্ছে।

পরিবেশকর্মী আহমদ গিয়াস বাংলানিউজকে বলেন, কক্সবাজার সৈকতের সায়মন পয়েন্ট থেকে দরিয়া নগর পর্যন্ত বেশি বর্জ্য ভেসে আসতে দেখা যাচ্ছে। এসব বর্জ্যের মধ্যে প্লাস্টিক ও কাচেঁর বোতল, ড্রাম, ঝুঁড়ি, দড়ি ছাড়াও এসব বর্জ্যের সঙ্গে নৌবাহিনীর টুপির মতো বিভিন্ন কাপড় চোপড়ও ভেসে আসছে। আটকা পড়া কয়েকটি মরা কচ্ছপও দেখা যাচ্ছে।

আহমদ গিয়াস বলেন, বর্জ্যের সঙ্গে সমুদ্রের তলদেশের কিছু উদ্ভিদ, শেওলা দেখা যাচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে কোন উপকূলীয় এলাকা সংলগ্ন সমুদ্র সৈকতের তলদেশে এসব বর্জ্যগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় শেওলাগুলো বর্জ্যের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে হয়ত এখন এসব বর্জ্য উপকূলে ভেসে আসছে।

কক্সবাজারভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচারের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম রিয়াদ বলেন, ‘শনিবার রাত থেকে এসব বর্জ্য আসতে শুরু করেছে। এরমধ্যে প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক বর্জ্য আর ছেঁড়া জাল দেখা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত এসব বর্জ্য সরাতে সরকারি-বেসরকারি কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ সেন বাঞ্চু বাংলানিউজকে বলেন, সাগরে ৬ নম্বর, কস্তুরাঘাট, কলাতলীসহ অসংখ্য পয়েন্টে দিয়ে প্রতিদিন শত শত টন বর্জ্য সাগরে ফেলা হয়। এছাড়া সাগরেও আমাদের মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল। যে কারণে দেশীয় জাহাজ তো আছেই অনেক বড় বড় বিদেশী জাহাজ থেকে সাগরে বর্জ্য ফেলা হয়।  

‘এর কারণে আমাদের সমুদ্রের যে বাস্তুসংস্থান সেটি ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব প্লাস্টিক মাইক্রো প্লাস্টিকে (প্লাস্টিক কণা) রূপান্তরিত হয়ে মাছের খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে শেষ পর্যন্ত মানবদেহে চলে আসছে’, যোগ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ) আবু নাছের মো. ইয়াছিন গণমাধ্যমকে জানান, প্লাস্টিকসহ নানা ধরনের বর্জ্যে আটকা পড়েছে কচ্ছপ। ঘটনাস্থলে একটি টিম পাঠানো হয়েছে। তারা কচ্ছপগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিত করবে এবং সুস্থগুলোকে সাগরে ফিরিয়ে দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২,২০২০,
এসবি/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।